রওশন এরশাদের পৈতৃক বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর

ময়মনসিংহ শহরের টাউন হল এলাকায় জাতীয় পার্টির প্রয়াত চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের স্ত্রী এবং সাবেক বিরোধীদলীয় নেত্রী রওশন এরশাদের পৈতৃক বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর ঘটনা ঘটেছে।

রওশন এরশাদের পৈতৃক বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর ঘটনা ঘটেছে

বৃহস্পতিবার (১৫ মে) দুপুরে হামলা করে নির্মাণাধীন স্থাপনা ও পুরোনো বাড়ির ভেতরের আসবাব ভাঙচুর করা হয়।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, দুপুর পৌনে দুইটার দিকে আন্দোলনকারীরা নির্মাণাধীন ভবনে ঢুকে নির্মাণাধীন ইটের দেয়ালগুলো ভেঙে দেয় এবং পুরোনো ঘরের ভেতরের আসবাবপত্র তছনছ করেন। এ সময় হামলার নেতৃত্ব দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ময়মনসিংহ মহানগর শাখার যুগ্ম সদস্যসচিব ওয়ালিদ আহমেদ।

বাড়িটি সম্প্রতি ‘কুটুম বাড়ি’ নামে একটি রেস্তোরাঁর জন্য ১২ বছরের মেয়াদে ভাড়া নিয়েছেন বজলুর রহমান নামে এক ব্যবসায়ী। তিনি বাড়িটি সংস্কার করে সেখানে একটি রেস্তোরাঁ চালু করবেন।

কিন্তু স্থানীয় একাংশের দাবি, এটি ‘দালাল মহল’ হিসেবে চিহ্নিত হওয়ায় এখানে বাণিজ্যিক কার্যক্রম চলতে দেওয়া যাবে না।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, এর আগে ২৩ এপ্রিল তারা বাড়ির সামনে মানববন্ধন করে এবং একটি স্মারকলিপি জেলা প্রশাসকের কাছে জমা দেয়। তারা সেখানে একটি ‘জুলাই স্মৃতি জাদুঘর’ নির্মাণের দাবি জানান।

তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে পদক্ষেপ না নেওয়ায় এই প্রতিক্রিয়ামূলক কর্মসূচি নেওয়া হয়। ঘটনার পরপরই পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।

এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ময়মনসিংহের যুগ্ম সদস্যসচিব ওয়ালিদ আহমেদ বলেন, শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখতে রওশন এরশাদ মুখ্য ভূমিকা পালন করেন। ৫ আগস্টের পর রওশন এরশাদের বাড়িটি দালাল মহল আখ্যায়িত করা হয়। কিন্তু বাড়িটিকে বাণিজ্যিক ভবন বানানোর পাঁয়তারা হচ্ছে। এর প্রতিবাদে তারা মানববন্ধন করে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দিলেও কাজ বন্ধ হয়নি। এ অবস্থায় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা সেখানে গিয়ে স্থাপনা ভেঙে দিয়েছেন। ফ্যাসিবাদের আস্তানায় বাণিজ্যিক স্থাপনা করতে দেওয়া হবে না।

কোতোয়ালি মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাইফুল ইসলাম বলেন, ভবনটি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই ক্ষোভ ছিল আন্দোলনকারীদের। আজ তারা এসে নির্মাণাধীন অংশ ও আসবাবপত্র ভাঙচুর করেন।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম বলেন, এই বাড়িটি ঘিরে জনমনে ক্ষোভ রয়েছে। তাই এখানে বাণিজ্যিক স্থাপনা নির্মাণ অনুচিত। আমরা এ বিষয়ে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।

রেস্তোরাঁ মালিক বজলুর রহমানের শ্যালক আহসানুল করীম বলেন, বাড়িটির মালিকদের কাছ থেকে নিয়ম অনুযায়ী আমরা ভাড়া নিয়েছি। অথচ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এটিকে দালাল মহল আখ্যা দিয়ে ভাঙচুর করা হয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এলাকায় নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। তবে এ ঘটনায় এখনো পর্যন্ত কোনো মামলা দায়ের হয়নি।