রিজার্ভ চুরির মামলার প্রতিবেদন পেছাল ৮৫তম বার

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় দায়ের করা মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ ফের পিছিয়েছে। প্রতিবেদন জমার দেড় মাস সময় বাড়িয়ে আগামী ২ জুলাই নতুন তারিখ ধার্য করেছেন ঢাকার একটি আদালত। আজ রবিবার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ওয়াহিদুজ্জামান নতুন এ দিন ধার্য করেন। এ নিয়ে মামলাটিতে ৮৫ বারের মত তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ পেছাল।

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি মামলার প্রতিবেদন দাখিল ২ জুলাই

রিজার্ভ চুরির মামলায় তদন্ত সংস্থা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য ছিল রবিবার। তবে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রায়হান উদ্দিন খান প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেননি। প্রতিবেদন দাখিল না করে সময় আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা।

আদালতের মতিঝিল থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা রুকনুজ্জামান জানান, সিআইডি সময় আবেদন করলে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ওয়াহিদুজ্জামান আগামী ২ জুলাই নতুন দিন ধার্য করেন।

যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক থেকে ২০১৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি সুইফট কোড জালিয়াতির মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি হয়ে যায়। জানা যায়, ওই অর্থ চলে যায় ফিলিপাইনে। ম্যানিলাভিত্তিক রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকের (আরসিবিসি) অ্যাকাউন্টে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল ওই অর্থ।

সংশ্লিষ্টদের ধারণা, দেশের ভেতরের একটি চক্রের সহায়তায় হ্যাকার গ্রুপ রিজার্ভের অর্থপাচার করেছে।

অর্থ পাচারের ঘটনায় ২০১৬ সালের ১৫ মার্চ বাংলাদেশ ব্যাংকের উপ-পরিচালক (অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড বাজেটিং) জোবায়ের বিন হুদা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে মতিঝিল থানায় মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২ (সংশোধনী ২০১৫) ও প্রযুক্তি আইনে মামলা করেন।

মামলাটি বর্তমানে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) তদন্ত করছে। কিন্তু দফায় দফায় সময় নিয়েও তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেনি সংস্থাটি।

জানা গেছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের খোয়া যাওয়া ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার ফিলিপিনো মুদ্রা পেসো হয়ে চলে যায় ম্যানিলার তিনটি ক্যাসিনোতে। এখন পর্যন্ত ম্যানিলার একটি ক্যাসিনোর মালিকের কাছ থেকে আরসিবিসি ব্যাংকের মাধ্যমে ১ কোটি ৫০ লাখ ডলার উদ্ধার করে বাংলাদেশ সরকারকে বুঝিয়ে দেন ফিলিপাইন সরকার।

এছাড়া শ্রীলঙ্কার একটি ব্যাংক থেকে আরও ২ কোটি ডলার পুনরুদ্ধার করেছে বাংলাদেশ। বাকি ৪ কোটি ৬০ লাখ ডলার আর পাওয়া যায়নি।

সর্বশেষ গত ১৩ এপ্রিল আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছিলেন, রিজার্ভ চুরির ঘটনায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনেকে জড়িত আছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বাংলাদেশ ব্যাংককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।