‘পশুবাহী গাড়ি মাঝপথে থামালেই কঠোর ব্যবস্থা, কমবে হাসিল’

আসন্ন পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে কোরবানির পশুর হাটে সর্বাত্মক শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে একগুচ্ছ কঠোর নির্দেশনা জারি করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। আজ দুপুরে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এ সংক্রান্ত এক গুরুত্বপূর্ণ আইনশৃঙ্খলা সভা শেষে তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে এই নির্দেশনাবলি তুলে ধরেন।

ফাইল ছবি

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা কোরবানির পশুর হাটগুলোতে প্রায়শই শৃঙ্খলার অভাব পরিলক্ষিত হয় উল্লেখ করে বলেন, ‘এবার আমরা সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত নিয়েছি। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা কোরবানির পশু, বিশেষত গরুবাহী যানবাহনের সামনে অবশ্যই নির্ধারিত হাটের নাম স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকতে হবে। রাস্তায় বা যত্রতত্র পশু নামানো যাবে না, কেবলমাত্র অনুমোদিত স্থানেই নামাতে হবে।’

তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, কোনো নির্দিষ্ট হাটের উদ্দেশে রওনা হওয়া পশুবাহী গাড়ি মাঝপথে থামানো হলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নিরাপত্তা ব্যবস্থার ওপর জোর দিয়ে উপদেষ্টা জানান, প্রতিটি পশুর হাটেই আনসার সদস্য মোতায়েন করা হবে। কিছু বড় হাটে ৭৫ জন পর্যন্ত আনসার সদস্য থাকতে পারেন, তবে হাটের আকার ও গুরুত্ব অনুযায়ী এই সংখ্যা কমবেশি হতে পারে।

তিনি আরও বলেন, ‘নিরাপত্তার পাশাপাশি প্রতিটি হাটে পশু চিকিৎসকের উপস্থিতি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, যাতে কোনোভাবেই অসুস্থ বা রোগাক্রান্ত পশু বিক্রি হতে না পারে। এছাড়া, ক্রেতা-বিক্রেতাদের জন্য প্রাথমিক চিকিৎসার (ফার্স্ট এইড) সুব্যবস্থাও রাখতে হবে।’

পশুর হাটের হাসিল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এ বছর প্রতি একশত টাকায় ৫ টাকা হারে হাসিল আদায় করা হলেও, আগামী বছর থেকে তা কমিয়ে ৪ টাকা করার পরিকল্পনা রয়েছে।’

ঈদযাত্রা ও সার্বিক পরিস্থিতি নিয়েও নির্দেশনা দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি জানান, ঈদের পাঁচ দিন আগে থেকে শুরু করে ঈদের পর তিন দিন পর্যন্ত বাল্কহেড চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে এবং রাতের বেলায় এদের চলাচল কোনোভাবেই অনুমোদিত হবে না। পাশাপাশি বাস, ট্রেন ও নৌযানে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন এবং পশু পরিবহনের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম কঠোরভাবে অনুসরণ করার নির্দেশ দেন তিনি।

বিভিন্ন দাবি-দাওয়া প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, ‘মানুষের যৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়ার জন্য আমরা সব মন্ত্রণালয়কে আহ্বান জানাব। তবে, অযৌক্তিক কোনো দাবি যেন কেউ না করে এবং নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের সীমানার মধ্যে শান্তিপূর্ণভাবে দাবি উত্থাপন করে, রাস্তা বন্ধ করে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি সৃষ্টি না করে, সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে।’

এই ব্রিফিংকালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখস চৌধুরী, র‌্যাবের মহাপরিচালক এ কে এম শহিদুর রহমানসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।