সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে হেঁটে সর্বোচ্চ শৃঙ্গে পা রাখলেন শাকিল

বাংলাদেশি তরুণ ইকরামুল হক শাকিল ইতিহাস গড়লেন পর্বতারোহণের জগতে। পদযাত্রার মাধ্যমে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট জয় করে তিনি শুধু দেশের গর্বই নন, হয়েছেন এক অনন্য বিশ্বরেকর্ডের অধিকারী।

ইকরামুল হক শাকিল

‘সি টু সামিট’ শিরোনামের অভিযানে শাকিল পদযাত্রা করে কক্সবাজারের ইনানি সমুদ্রসৈকত থেকে নেপালের এভারেস্টের চূড়া পর্যন্ত প্রায় ১,৩০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেন। এই পথ ছিল দীর্ঘ, দুর্গম এবং উচ্চতাভেদে চরম প্রতিকূল।

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, তিনি এই অভিযান শেষ করেছেন বিশ্বের সবচেয়ে কম সময়ে এবং সবচেয়ে কম বয়সে, যা একটি বৈশ্বিক রেকর্ড।

১৯৯০ সালে অস্ট্রেলীয় পর্বতারোহী টিম ম্যাকার্টনি-স্নেপ ভারতের গঙ্গাসাগর থেকে শুরু করে প্রায় ১,২০০ কিলোমিটার পথ হেঁটে ৯৬ দিনে এভারেস্ট জয় করেছিলেন।

শাকিল সেই রেকর্ডকে পেছনে ফেলে ১,৩০০ কিলোমিটারেরও বেশি পথ পাড়ি দিয়ে ৯০ দিনের মধ্যেই এভারেস্টের চূড়া জয় করেন। এতে সময় কম লেগেছে এবং দূরত্বও বেশি। শুধু তাই নয়, বয়সেও তিনি টিমের চেয়ে ছোট, ফলে তিনিই এখন পর্যন্ত ‘সি টু সামিট’ ধারায় সবচেয়ে কম বয়সী অভিযাত্রী হিসেবে রেকর্ডধারী।

সোমবার (১৯ মে) বাংলা মাউন্টেনারিং অ্যান্ড ট্রেকিং ক্লাবের (বিএমটিসি) সমন্বয়ক সাদিয়া সুলতানা শম্পা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শাকিলের অফিসিয়াল ফেইসবুক পেজ ‘Ikramul Hasan Shakil - ইকরামুল হাসান শাকিল’-এ দেওয়া এক পোস্টে।

তিনি জানান, শাকিল সফলভাবে এভারেস্ট চূড়া জয় করে বর্তমানে ক্যাম্প-৪-এ অবস্থান করছেন। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে পদযাত্রায় শুরু করে এভারেস্ট জয় করার মাধ্যমে সে বাংলাদেশের পতাকা বিশ্বের সর্বোচ্চ স্থানে তুলে ধরেছে। এটাই তার জীবনের স্বপ্ন ছিল।

তবে যোগাযোগের সীমাবদ্ধতার কারণে শাকিল ঠিক কোন সময়ে শিখরে পৌঁছান, বা তার দলের সদস্য সংখ্যা কত ছিল—তা এখনো জানা যায়নি।

শাকিল তার পদযাত্রা শুরু করেন ২০২৫ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি, কক্সবাজারের ইনানি সৈকত থেকে। এরপর তিনি বাংলাদেশের পার্বত্য অঞ্চল, ভারতের বিভিন্ন রাজ্য এবং নেপালের দুর্গম পাহাড়ি পথ পেরিয়ে অবশেষে এভারেস্ট বেস ক্যাম্প এবং সেখান থেকে ক্যাম্প ১, ২, ৩ ও ৪ অতিক্রম করে পৌঁছান শৃঙ্গে—যার উচ্চতা ২৯,০৩১ ফুট।