৪ জেলায় আকস্মিক বন্যার আশঙ্কা, নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে

ভারতের মেঘালয় ও আসামে টানা ভারি বর্ষণ এবং দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অব্যাহত বৃষ্টিপাতের ফলে বাংলাদেশের চার জেলায় আকস্মিক বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় ময়মনসিংহ বিভাগের শেরপুর ও নেত্রকোণা এবং সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জ ও সিলেট জেলায় পাহাড়ি ঢলের আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ফাইল ছবি

আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ময়মনসিংহ বিভাগের শেরপুর ও নেত্রকোণা এবং সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জ ও সিলেট জেলার ওপর দিয়ে পাহাড়ি ঢল বয়ে যেতে পারে। এর ফলে নদ-নদীর পানি হঠাৎ করে দ্রুত বাড়তে পারে এবং নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে।

শেরপুর জেলার চেল্লাখালী নদীর পানি ইতোমধ্যেই বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে।

শেরপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার (২০ মে) সকাল ১০টায় চেল্লাখালী নদীর পানি বিপৎসীমার ১০৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল, যেখানে সোমবার (১৯ মে) রাত ১০টায় তা ছিল ৩৯ সেন্টিমিটার ওপরে। এটি এক রাতের ব্যবধানে পানি বৃদ্ধির একটি রেকর্ড হিসেবে ধরা হচ্ছে।

পাউবো জানিয়েছে, আজ ভোর থেকে শেরপুরসহ বিভিন্ন জেলায় মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হয়েছে এবং এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে উজানে অব্যাহত ভারি বর্ষণ। ফলে নদ-নদীর পানি আরও বাড়তে শুরু করেছে এবং এ ধারা আগামী ২৪ ঘণ্টায় অব্যাহত থাকতে পারে।

এদিকে, আবহাওয়াবিষয়ক বেসরকারি ওয়েবসাইট ‘আবহাওয়া ডট কম’-এর প্রধান আবহাওয়াবিদ মোস্তফা কামাল পলাশ জানান, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নদ-নদীগুলোতে হঠাৎ করে পানি বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে। পাহাড়ি ঢলের কারণে শেরপুর, নেত্রকোণা, সুনামগঞ্জ ও সিলেট জেলার নিম্নাঞ্চলে আকস্মিক বন্যা দেখা দিতে পারে।

তিনি আরও বলেন, মঙ্গলবার থেকে বুধবার দুপুর পর্যন্ত রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের ওপর দিয়ে একটানা মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাত হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলতে পারে।

বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর রাডার চিত্র বিশ্লেষণ করে আবহাওয়াবিদ পলাশ তার ফেসবুক পোস্টে জানিয়েছেন, উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে উত্তর-পূর্ব দিকে বজ্রসহ বৃষ্টির একের পর এক প্রবাহ অতিক্রম করছে। এই প্রবাহ রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের ওপর দিয়ে যাচ্ছে। একই সঙ্গে বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন জেলাতেও বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে।

বিশেষ করে সকাল সাড়ে ১১টা থেকে বিকেল ৬টা পর্যন্ত সময়কে তিনি বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। এ সময়ে এসব এলাকায় প্রবল বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

এদিকে, স্থানীয় প্রশাসন এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থাগুলোকে সম্ভাব্য বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট নদীবিধ্বস্ত এলাকাগুলোতে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে এবং জনগণকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।