ফারুক: ড. ইউনূসের অসম্মানজনক বিদায় চায় না বিএনপি

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনে বিলম্ব দেশে অস্থিতিশীলতা বাড়াচ্ছে উল্লেখ করে বিএনপি নেতা জয়নুল আবেদিন ফারুক শুক্রবার বলেছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস অসম্মানজনকভাবে বিদায় নিলে তার দল ব্যথিত হবে।

জয়নুল আবেদিন ফারুক

একটি প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি বলেন, ‘মনে হচ্ছে দেশে একটা অস্থিরতার ঢেউ বয়ে যাচ্ছে। এই অস্থিতিশীলতার মূল হোতা কারা? কারা নির্বাচন বিলম্বিত করার চেষ্টা করছে? আপনার (ড. ইউনূস) মতো একজন মহান ব্যক্তির কাছ থেকে আমরা এসব বিষয় জানতে চাই।’

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ফারুক বলেন, সরকার যদি একটি সুস্পষ্ট নির্বাচনী রূপরেখা দিত, তাহলে যারা শেখ হাসিনার আমলে রাজপথে নেমেছিল এবং অগণিত মামলা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছিল, তারা গঠনমূলকভাবে যুক্ত হতে পারত এবং নির্বাচনমুখী হতে পারত।

তিনি আরও বলেন, ‘কিন্তু আপনি (ড. ইউনূস) এখনও কোনো রূপরেখা দেননি। এই অস্থিতিশীলতা যদি আপনার সৃষ্টি হয়, তাহলে জেনে রাখুন বিএনপি এর দায় কখনোই নেবে না।’

সংসদের সাবেক বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ ফারুক সরকারকে অবিলম্বে পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার আহ্বান জানান।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ‘অপরাজেয় বাংলাদেশ’ আয়োজিত ‘জাতীয় নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র রুখে দাঁড়াও দেশবাসী’ শীর্ষক কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন।

অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সম্ভাব্য পদত্যাগ নিয়ে গণমাধ্যমের খবরের প্রতি ইঙ্গিত করে ফারুক বলেন, ‘আপনার মতো একজন সম্মানিত ব্যক্তি যদি অসম্মানজনকভাবে বিদায় নিতে বাধ্য হন, তবে তা আমাদের কষ্ট দেবে।’

তিনি বলেন, ‘বিচারপতি সাহাবুদ্দিন আহমেদের মতো আপনার নামও ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকুক একটি সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করে, দিনের আলোয় ভোটগ্রহণ করে এবং আমাদের ভোটের অধিকার রক্ষা করার মাধ্যমে... এমন কীর্তি ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।’

বিএনপি নেতা প্রধান উপদেষ্টাকে একটি শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক উত্তরণ নিশ্চিত করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করার আহ্বান জানান, যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম তাকে জাতির একজন গ্রহণযোগ্য ও সম্মানিত ব্যক্তি হিসেবে স্মরণ করতে পারে এবং গর্ববোধ করতে পারে।

ফারুক বলেন, ‘কাজেই, আমি আপনাকে আন্তরিকভাবে অনুরোধ করছি, অবিলম্বে আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, মাহফুজ আলম এবং খলিলুর রহমান—এই তিন ব্যক্তিকে উপদেষ্টা পরিষদ থেকে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়ে চিঠি দিন। নতুবা তাদের সরানোর দায়িত্ব আপনার ওপরই বর্তাবে।’

ফারুক বলেন, সংস্কার অবশ্যই করা উচিত, কিন্তু এমনভাবে নয় যাতে মিয়ানমারের জন্য করিডোর তৈরি হয় বা চট্টগ্রাম বন্দর অন্যের হাতে চলে যায়।

তিনি এমন কোনো সংস্কারের বিরুদ্ধে সতর্ক করেন যা ষড়যন্ত্রকারীদের নির্বাচন বিলম্বিত করতে এবং অধ্যাপক ইউনূসের সরকারকে অস্থিতিশীলতার দিকে ঠেলে দিতে পারে। এই অস্থিতিশীলতা কাটাতে ফারুক বলেন, অধ্যাপক ইউনূসকেই আগামী কয়েক দিনের মধ্যে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে হবে।