এরদোয়ান-আল শারা বৈঠক: সিরিয়ায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে হুঁশিয়ারি

ইস্তাম্বুলে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন সিরিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা। শনিবার ইস্তাম্বুলের দলমাবাচ প্রাসাদে আল-শারাকে আনুষ্ঠানিক অভ্যর্থনা জানান প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান। খবর আল জাজিরার।

ইস্তাম্বুলে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের সঙ্গে সিরিয়ার আহমেদ আল-শারা

গৃহযুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়াকে অর্থনৈতিকভাবে পুনরুদ্ধার ও পুনর্গঠনের জন্য দেশটির ওপর থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ঘোষণার পর তুরস্কের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে এ বৈঠক হলো সিরীয় নেতার।

এরদোয়ান ও আল-শারার বৈঠকের বিষয়টি রুদ্ধদ্বার হলেও পরে তুরস্কের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় একটি ছবি প্রকাশ করেছে। তাতে দেখা গেছে, এরদোয়ান ছাড়াও তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান, প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়াসার গুলার, জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার পরিচালক ইব্রাহিম কালিন এবং তুরস্কের প্রতিরক্ষা শিল্পের সচিব হালুক গর্গুন বৈঠকে অংশ নিয়েছেন।

সিরিয়ার ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদকে উৎখাত করার ক্ষেত্রে তুরস্কের ব্যাপক সমর্থন পাওয়া আল-শারার সঙ্গে ছিলেন তার প্রতিরক্ষামন্ত্রী মুরহাফ আবু কাসরা এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদ আল-শাইবানি।

এরদোয়ানের কার্যালয় জানিয়েছে, বৈঠকে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট সিরিয়ার ওপর থেকে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারকে স্বাগত জানিয়েছেন। এছাড়াও দুই নেতারা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক গভীর করা এবং সিরিয়ার পুনর্গঠনসহ পারস্পরিক বেশ কয়েকটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন।

এরদোয়ান বলেছেন, সিরিয়ার ভূখণ্ডে ইসরায়েলের দখলদারিত্ব এবং আগ্রাসন অগ্রহণযোগ্য। তুরস্ক প্রতিটি প্ল্যাটফর্মে এর বিরোধিতা অব্যাহত রাখবে। ইসরায়েলের আগ্রাসন কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না।

সিরিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন নেতাকে ফেব্রুয়ারিতে রাজধানী আঙ্কারায় অভ্যর্থনা জানিয়েছিলেন এরদোয়ান। এটি আল শারার দ্বিতীয়বার তুরস্ক সফর। তবে ফেব্রুয়ারির শুরুতে প্রথমবার আন্তর্জাতিক সফরে সৌদি আরবে যান আল শারা। এ সফরে রিয়াদে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে আল শারার বৈঠক হয়।

দ্বিতীয় দফায় গত ১৪ মে সৌদি আরবের রিয়াদে যান আল-শারা। সেখানে সৌদি যুবরাজের উপস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্য সফররত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাত করেন সিরীয় নেতা।

ট্রাম্প আল-শারার সঙ্গে বৈঠকের পরই সিরিয়ার ওপর থেকে আসাদ আমলের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ইঙ্গিত দেন। সর্বশেষ গত ২৩ মে সিরিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার আদেশ জারি করে ট্রাম্প প্রশাসন।

সিরিয়ার ওপর প্রথম মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল ১৯৭৯ সালে, যখন বাশার আল-আসাদের বাবা হাফিজ আর আসাদ ক্ষমতায় ছিলেন। কিন্তু ২০১১ সালে আল-আসাদ সরকার বিক্ষোভকারীদের ওপর মারাত্মক দমন-পীড়ন শুরু করার পর নিষেধাজ্ঞার মাত্রা বাড়ানো হয়েছিল।