এক সপ্তাহে গাজায় ১০টি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল

গত সপ্তাহে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় কমপক্ষে আরও ১০টি হাসপাতাল ও ক্লিনিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর ফলে এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে চিকিৎসা সেবা সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে বন্ধ হয়ে গেছে এবং ইতোমধ্যেই ভেঙে পড়া স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর আরও মারাত্মক চাপ সৃষ্টি হয়েছে। শনিবার ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম হারেৎজ এক প্রতিবেদনে এই উদ্বেগজনক তথ্য জানিয়েছে।

ছবি - সংগৃহীত

হারেৎজের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ১৮ মে খান ইউনিসের ইউরোপীয় হাসপাতালে হামলার মধ্য দিয়ে ইসরায়েলি বাহিনী ‘অপারেশন গিডিওনস চ্যারিয়টস’ নামে পরিচিত তীব্র স্থল অভিযান শুরু করে। ইসরায়েলি নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা গত ৪ মে এই অভিযানের অনুমোদন দিয়েছিল।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনীর নতুন এই হামলাগুলোর কারণে প্রায় ৪ লাখ মানুষ চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

এদিকে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) গত সপ্তাহে অবরুদ্ধ এই ছিটমহল জুড়ে বিভিন্ন হাসপাতালে ২৮টি হামলার ঘটনা নথিভুক্ত করেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে দেওয়া এক বিবৃতিতে ডব্লিউএইচও সতর্ক করে বলেছে, এই সামরিক অভিযান গাজার স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণ ভেঙে পড়ার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। যুদ্ধবিধ্বস্ত এই উপত্যকার ৯৪ শতাংশ হাসপাতাল ইতিমধ্যেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অথবা ধ্বংস হয়ে গেছে।

ডব্লিউএইচও তাদের বিবৃতিতে জোর দিয়ে বলেছে, "হাসপাতালকে কখনোই সামরিক লক্ষ্যবস্তু করা উচিত নয়।" সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, গাজা উপত্যকার ৩৬টি হাসপাতালের মধ্যে মাত্র ১৯টি এখন আংশিকভাবে চালু রয়েছে। অব্যাহত ইসরায়েলি হামলার কারণে গত সপ্তাহে চারটি গুরুত্বপূর্ণ হাসপাতাল বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে কর্তৃপক্ষ।

ইসরায়েলের পক্ষ থেকে বরাবরের মতোই দাবি করা হচ্ছে, ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা হাসপাতালের ভেতরে লুকিয়ে রয়েছে এবং এই যুক্তিতেই তারা হাসপাতালগুলোতে হামলা চালাচ্ছে।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর সর্বাত্মক সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকে উপত্যকাটির স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যা হাজার হাজার রোগীর জীবনকে চরম ঝুঁকিতে ফেলেছে।

সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি