জামায়াত নেতা আজহারুল: আমি এখন মুক্ত

দীর্ঘ প্রায় ১৪ বছর পর কারামুক্ত হয়ে জনসমক্ষে আবেগঘন বক্তব্য দিয়েছেন যুদ্ধাপরাধের মামলায় খালাসপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলাম। তিনি বলেছেন, আমি এখন মুক্ত। আমি এখন স্বাধীন দেশের একজন স্বাধীন নাগরিক।

জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলাম

বুধবার (২৮ মে) সকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) থেকে ছাড়া পান তিনি। হাসপাতাল গেট থেকে বের হলে তাকে দলীয় নেতাকর্মীরা ফুল দিয়ে বরণ করে নেন। পরে শাহবাগ মোড়ে আয়োজিত এক জনসভায় যোগ দিয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বক্তব্য দেন আজহার।

তিনি বলেন, প্রায় ১৪ বছর পর আমি আজ মুক্ত হলাম। এই মুক্তি শুধু আমার একার নয়, এটি একটি দীর্ঘ লড়াইয়ের ফল। একটি অন্যায় ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলায় আমাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সত্য কখনও চাপা থাকে না। আজ সেই সত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

আদালতের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে আজহার বলেন, আমি সর্বপ্রথম আদালতকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। তারা দেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা রেখেছেন। তবে এটা অস্বীকার করার উপায় নেই যে এতদিন দেশে ন্যায়বিচার ছিল না। বিচার ব্যবস্থাকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে।

আন্দোলনরত নেতাকর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, আমি ধন্যবাদ জানাতে চাই ৩৬ জুলাইয়ের মহাবিপ্লবীদের, যাদের রক্ত, ঘাম আর আন্দোলনের ফসল আজকের এই মুক্তি। তাদের কারণেই ৫ আগস্ট দেশের জনগণ একটি স্বৈরশাসকের পতন ঘটিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, যারা ১৫ বছর ধরে রাজপথে নিজেদের রক্ত ঢেলে জনগণের ঘাড়ে চেপে বসা একদলীয় শাসনের অবসান ঘটিয়েছেন, আমি তাদের শাহাদাতের সর্বোচ্চ মর্যাদা কামনা করি। এই আত্মত্যাগই বাংলাদেশের ভবিষ্যতের জন্য আলোর পথ দেখাবে।

জনগণের অধিকার ও ইসলামি মূল্যবোধ রক্ষার প্রত্যয় ব্যক্ত করে আজহারুল ইসলাম বলেন, এই মুক্তির সঙ্গে নতুন দায়িত্বও এসেছে। আমি কথা দিচ্ছি, যদি আল্লাহ তৌফিক দেন, তবে জীবনসায়াহ্ন পর্যন্ত জনগণের অধিকার, ন্যায়বিচার এবং ইসলামি মূল্যবোধের পক্ষে লড়াই চালিয়ে যাবো।

তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, আমরা কখনও অন্যায়ের কাছে মাথানত করিনি, করবোও না। আমাদের আন্দোলন থেমে নেই, থামবেও না। আজ থেকে আবার নতুনভাবে পথচলা শুরু হলো।