রাষ্ট্রদূত মিলার: দ্রুত বা দেরিতে নির্বাচন নয়, বাংলাদেশে সফল রাজনৈতিক উত্তরণ দেখতে চায় ইইউ

ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত ও প্রতিনিধিদলের প্রধান মাইকেল মিলার বৃহস্পতিবার বলেছেন, বাংলাদেশে ‘দ্রুত বা দেরিতে’ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য চাপ দেওয়া তাদের কাজ নয়, বরং তারা একটি সফল রাজনৈতিক উত্তরণ দেখতে চান।

মাইকেল মিলার

রাজশাহীর গ্র্যান্ড রিভারভিউ হোটেলে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি, আপনাদের নির্বাচনের তারিখ সংক্রান্ত যেকোনো সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের নিজস্ব ব্যাপার। দ্রুত বা দেরিতে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য আপনাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করার কোনো মতামত ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেই। এটা একেবারেই... এটা সত্যি আমাদের বিষয় নয়।’

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের জন্য চাপ দিচ্ছে, অন্যদিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বলছে সংস্কারের ওপর নির্ভর করে ২০২৫ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে।

রাষ্ট্রদূত মিলার বলেন, তারা বাংলাদেশে এই রাজনৈতিক উত্তরণকে সমর্থন করেন। ‘আমরা চাই আপনাদের রাজনৈতিক উত্তরণ একটি সফল উত্তরণ হোক,’ তিনি বলেন এবং যোগ করেন যে তারা বাংলাদেশের ঘটনাবলি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন।

রাষ্ট্রদূত মিলার জানান, তারা জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কার্যক্রম সম্পর্কে অবগত। তিনি মৌলিক অধিকার, আইনের শাসন এবং যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, ‘আপনাদের সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়নে আমরা দক্ষতা দিয়ে সহায়তা করতে পারি।’

রাষ্ট্রদূত মিলার বলেন, উত্তরণের পথে বাংলাদেশের প্রচেষ্টায় তারা জোরালো সমর্থন দিয়ে যাচ্ছেন।

তিনি আরও বলেন, কোন দল নিবন্ধিত হবে বা হবে না, সেটি বাংলাদেশের সিদ্ধান্ত, কারণ নিবন্ধন ও নিবন্ধন বাতিলের বেশ কিছু ঘটনা রয়েছে।

রাষ্ট্রদূত মিলার মন্তব্য করেন, রাজশাহীর আম বিশ্বজুড়ে সমাদৃত এবং এই অঞ্চলের আম ইউরোপীয় বাজারে একটি বড় জায়গা করে নিতে পারে। শুধু আমই নয়, এখানকার আরও অনেক পণ্য রয়েছে যা আন্তর্জাতিক বাজারে রপ্তানি করা যেতে পারে বলে তিনি উল্লেখ করেন। এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন সহযোগিতা করতে প্রস্তুত বলেও জানান রাষ্ট্রদূত।

তিনি আরও জানান, রাজশাহী চেম্বার অব কমার্সের সঙ্গে ইতোমধ্যে একটি ফলপ্রসূ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং আশা প্রকাশ করেন যে এটি ঘনিষ্ঠ বাণিজ্য সম্পর্কের পথ প্রশস্ত করবে।

রাষ্ট্রদূত মিলার রাজশাহী শহরের পরিকল্পিত অবকাঠামো এবং মনোরম পরিবেশের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ‘রাজশাহী শহর খুবই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও সুপরিকল্পিত। এখানকার মানুষের আন্তরিকতা ও আতিথেয়তায় আমি মুগ্ধ।’