বন্দি মুক্তির দাবিতে নেতানিয়াহুর দলের সদর দপ্তর ঘেরাও, তেল আবিবে তীব্র বিক্ষোভ

গাজায় আটক ইসরায়েলি বন্দীদের মুক্তির দাবিতে দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর দলের কার্যালয় ঘেরাও করেছে বিক্ষুব্ধ জনতা। বুধবার ইসরায়েলের তেল আবিবে অবস্থিত কট্টরপন্থী লিকুদ পার্টির সদরদপ্তর ‘মেৎজুদাত জিএভ’-এ জোরপূর্বক প্রবেশ করে বিক্ষোভকারীরা। সেখানে তারা নেতানিয়াহুর অফিসের সামনে নিজেদের শৃঙ্খলাবদ্ধ করে প্রতিবাদ জানায়। এই খবর জানিয়েছে মিডলইস্টমনিটর।

লিকুদ পার্টির অফিসের সামনে থাকা বিক্ষুব্ধ লোকজনকে সরিয়ে দিতে চাইছে পুলিশ

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ইয়েদিওথ আহারোনোথ জানিয়েছে, গাজায় যুদ্ধ শুরুর ৬০০ দিন পূর্তি উপলক্ষে এই বিক্ষোভের ডাক দেওয়া হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, পুলিশ সদস্যরা বিক্ষোভকারীদের জোর করে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলেও, অনেকে অফিসের সিঁড়ির রেলিংয়ে নিজেদের হাত বেঁধে ফেলে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন।

জানা গেছে, লিকুদ পার্টির কার্যালয়ের বাইরে শত শত মানুষ জড়ো হয়ে আশপাশের সড়ক অবরোধ করে রাখে। বিক্ষোভকারীদের অনেকে নেতানিয়াহু ও তার মন্ত্রিসভার সদস্যদের মুখোশ পরে এবং মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বন্দিদের মতো প্রতীকী কমলা রঙের পোশাক পরে প্রতিবাদে অংশ নেয়। এ সময় তারা অবিলম্বে নেতানিয়াহুর পদত্যাগ এবং গাজায় আটক বন্দিদের ফিরিয়ে আনার দাবি জানায়।

বিক্ষোভকারীরা অভিযোগ করেছেন, ইসরায়েলি সরকার একাধিকবার যুদ্ধবিরতি, গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহার এবং ইসরায়েলি কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনিদের মুক্তির বিনিময়ে গাজায় আটক সকল ইসরায়েলিকে মুক্তি দেওয়ার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে।

বন্দিদের পরিবারের সদস্যরা আরও অভিযোগ করেন, নেতানিয়াহু নিজের রাজনৈতিক স্বার্থ ও ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতেই যুদ্ধ দীর্ঘায়িত করছেন। কারণ, তার জোট সরকারের কট্টর ডানপন্থী শরিকরা যুদ্ধ বন্ধ হলে সরকার থেকে বেরিয়ে যাওয়ার হুমকি দিয়েছে।

অন্যদিকে, যুদ্ধ চলমান থাকায় নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলাগুলোর বিচার প্রক্রিয়াও আপাতত স্থগিত রয়েছে। বিরোধীরা এটিকে নেতানিয়াহুর ‘রাজনৈতিক সুবিধা আদায়ের কৌশল’ হিসেবেই দেখছে।

বন্দি পরিবারের সদস্যরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, ‘নেতানিয়াহু ব্যক্তিগত স্বার্থে দেশের নিরাপত্তাকে ঝুঁকিতে ফেলেছেন। সরকার যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করে গাজায় বন্দিদের মুক্তির বিষয়টিকে রাজনৈতিক দর কষাকষির হাতিয়ারে পরিণত করেছে।’