মসজিদে আজান নিষিদ্ধের ইসরায়েলি মন্ত্রীর নির্দেশ, হামাসের তীব্র নিন্দা ও হুঁশিয়ারি

ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতামার বেন-গভির মসজিদ থেকে আজান নিষিদ্ধ করার যে নতুন নির্দেশনা দিয়েছেন, তার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এই পদক্ষেপকে মুসলমানদের অনুভূতির প্রতি চরম অবমাননা এবং ধর্মীয় অধিকারের উপর প্রকাশ্য আগ্রাসন হিসেবে আখ্যা দিয়েছে তারা। মিডলইস্টমনিটরের এক প্রতিবেদনে এই খবর প্রকাশিত হয়েছে।

ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতামার বেন-গভির

রোববার (১ জুন) প্রকাশিত এক বিবৃতিতে হামাস সতর্ক করে বলেছে, ‘বেন-গভিরের এই সিদ্ধান্ত বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয়, বরং এটি ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে চলমান নিপীড়ন ও পবিত্র স্থানগুলোতে হামলারই ধারাবাহিক অংশ।’ এই ধরনের সিদ্ধান্তের ভয়াবহ পরিণতির বিষয়েও সংগঠনটি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে।

হামাসের বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘আমরা দখলদার ইসরায়েলের এই নীতিকে দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করছি। এটি একটি নির্মম ধর্মীয় যুদ্ধের অংশ, যা ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান এবং পবিত্র স্থানগুলোর বিরুদ্ধে পরিচালিত হচ্ছে। এই আগ্রাসন আন্তর্জাতিক আইন ও ঐতিহাসিক অধিকারকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে চালানো হচ্ছে।’

বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়, ‘ইসরায়েলি সরকারের প্রত্যক্ষ মদদে দখলদার বাহিনী ক্রমাগত ফিলিস্তিনি জনগণ ও তাদের ধর্মীয় স্থানগুলোর উপর হামলা চালাচ্ছে।’ এর ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ ও অস্থিরতা আরও বৃদ্ধি পাবে বলেও সতর্ক করে দেয় হামাস।

ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে হামাস বলেছে, ‘আমরা অত্যাচারিত ফিলিস্তিনি ভাই-বোনদের প্রতি মসজিদ ও পবিত্র স্থানগুলোর রক্ষায় সব ধরনের জনভিত্তিক ও জাতীয় প্রতিরোধ কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। আমাদের ঐতিহাসিক ও ধর্মীয় অধিকারের বিরুদ্ধে যেকোনো ষড়যন্ত্রের সমুচিত জবাব দিতে হবে।’

অন্যদিকে, ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম হারেৎজ পত্রিকার সূত্রে জানা যায়, বেন-গভির সম্প্রতি ইসরায়েলি পুলিশ কমিটির প্রধানদের সঙ্গে এক বিশেষ বৈঠকে মিলিত হন। সেখানে তিনি আরব শহর ও উপকূলীয় অঞ্চলের মসজিদ থেকে দেওয়া আজানের শব্দকে ‘শব্দদূষণ’ আখ্যা দিয়ে তা বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমি আপনাদের আমার নীতি বাস্তবায়নের জন্যই নিয়োগ দিয়েছি।’

বেন-গভির মসজিদের আজানের শব্দকে ‘একটি সমস্যাজনক বিষয়’ হিসেবে অভিহিত করে অবিলম্বে সে বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে পুলিশের প্রতি কঠোর নির্দেশ দেন। তার এই বক্তব্য স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।