ট্রাম্পের শুল্কনীতির জবাবে কানাডার ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয়: কার্নির নেতৃত্বে নতুন পরিকল্পনা

কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি সোমবার প্রথমবারের মতো দেশটির প্রাদেশিক প্রধানদের সঙ্গে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে মিলিত হয়েছেন। এই বৈঠকে তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের চাপিয়ে দেওয়া শুল্কনীতির বিরুদ্ধে কার্যকরভাবে লড়াই এবং দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে উচ্চাভিলাষী প্রকল্পগুলো দ্রুত বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

মার্ক কার্নি

বৈঠকে কার্নি আর্কটিক অঞ্চলে কানাডার সার্বভৌমত্ব শক্তিশালীকরণ এবং অঞ্চলটির সুরক্ষার জন্য অবকাঠামো নির্মাণের ওপর বিশেষভাবে জোর দেন। তিনি উল্লেখ করেন, আর্কটিক অঞ্চলের আধিপত্য নিয়ে বর্তমানে চীন, রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মতো কয়েকটি দেশ প্রতিযোগিতায় লিপ্ত রয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে কানাডার স্বার্থ রক্ষা করা অপরিহার্য।

কার্নি জানান, তার মন্ত্রিসভা উচ্চাকাঙ্ক্ষী জাতীয় প্রকল্পগুলো দ্রুত বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়নের কাজ শুরু করবে। এ সময় তিনি একটি বিস্তারিত পরিকল্পনার রূপরেখাও তুলে ধরেন। অন্টারিওর প্রধানমন্ত্রী ডগ ফোর্ড এই বৈঠককে গত ১০ বছরের মধ্যে শ্রেষ্ঠতম বলে অভিহিত করেছেন, যা আলোচনার ফলপ্রসূতাকে নির্দেশ করে।

প্রধানমন্ত্রী কার্নি আরও ঘোষণা দেন যে, কিছু সংখ্যক বড় ও ব্যয়বহুল প্রকল্পের পরিধি কমিয়ে আনা হবে। এর পরিবর্তে পাইপলাইন, পারমাণবিক চুল্লি এবং বাণিজ্য করিডোরের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। তিনি রেলওয়ে, বন্দর, বিমানবন্দর এবং বৈদ্যুতিক ট্রান্সমিশন লাইনের মতো গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগত প্রকল্পগুলো আগামী দুই বছরেরও কম সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

কানাডাকে জি-৭ জোটের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী অর্থনীতি হিসেবে গড়ে তোলার অঙ্গীকারও করেন কার্নি। তিনি বলেন, অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী হতে পারলে বিশ্বমঞ্চে কানাডা আরও জোরালো ও কার্যকর ভূমিকা পালন করতে সক্ষম হবে।

উল্লেখ্য, গত এপ্রিলে জাতীয় নির্বাচনে জয়লাভের পর এটিই ছিল কানাডার প্রাদেশিক নেতাদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী কার্নির প্রথম আনুষ্ঠানিক বৈঠক। নির্বাচনের সময় তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত শুল্ক হুমকির মোকাবিলায় দেশের অর্থনীতিকে আরও মজবুত করার জন্য ব্যাপক নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়েছিলেন।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কানাডার ইস্পাত, অ্যালুমিনিয়াম এবং অটোমোবাইল খাতের ওপর শুল্ক আরোপ করেছেন। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের ইস্পাত শিল্পকে সুরক্ষা দেওয়ার নামে ট্রাম্প প্রশাসন ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর শুল্ক দ্বিগুণ করে ৫০ শতাংশ করার পরিকল্পনা করছে বলে জানা গেছে। প্রধানমন্ত্রী কার্নি ট্রাম্পের এই ধরনের পদক্ষেপকে অযৌক্তিক ও বেআইনি বলে কঠোর সমালোচনা করেছেন।

সূত্র: বিবিসি