কৃষি জমি সুরক্ষায় আসছে আইন! দুর্নীতি দমনেও জোর

কৃষি ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানিয়েছেন যে, কৃষি জমি রক্ষা করার জন্য একটি বিশেষ আইন তৈরি করার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। তিনি চান, এই আইন প্রণয়নের মাধ্যমে কৃষি জমি যেন অন্য কোনো খাতে চলে না যায় বা বেহাত না হয়, তা নিশ্চিত করতে।

মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী

সোমবার (৯ মে) দুপুরে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে অবস্থিত কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ ফলিত পুষ্টি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারটান) পরিদর্শনের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে বিদ্যমান বৈষম্যের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “আমাদের দেশে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ জমি অধিগ্রহণ করলে জমির মালিককে তিনগুণ দাম দেয়। কিন্তু স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সেই নিয়ম মানে না। এলজিইডির অধীনে যেসব রাস্তাঘাট তৈরি হয়, সেসব ক্ষেত্রেও জমির মালিকরা যেন সঠিক দাম পান, সেই ব্যাপারে আমরা চেষ্টা করছি।”

দেশের কৃষি উৎপাদন পরিস্থিতি সম্পর্কে তিনি বলেন, “এ বছর বোরো ধানের উৎপাদন প্রায় ১৫ লক্ষ টন বেশি হয়েছে। আশা করা যায়, আগামীতে আমাদের আর চাল আমদানি করতে হবে না। আলুর ফলনও অনেক ভালো হয়েছে, কিন্তু কৃষকরা সে অনুযায়ী দাম পাচ্ছেন না। গমের উৎপাদন গত বছরের চেয়ে বাড়লেও তা আমাদের চাহিদার তুলনায় এখনো কম। তবে, দেশে আদা এবং হলুদের চাষ বাড়ছে, যার ফলে ভবিষ্যতে এই দুটি মশলা আমদানিও কমে আসতে পারে।”

উপদেষ্টা আরও বলেন, “সরকার কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি ফসল কেনার সময় ১৫ দিন এগিয়ে এনেছে। এর উদ্দেশ্য হলো, কৃষকরা যেন তাদের ফসলের ন্যায্য মূল্য পান এবং মধ্যস্বত্বভোগীদের দ্বারা প্রতারিত না হন।”

দুর্নীতির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমাদের প্রধান সমস্যা হলো দুর্নীতি। যদি দুর্নীতি দমন করা যায়, তবে অনেক সমস্যারই সমাধান হয়ে যাবে। আমি চেষ্টা করছি, কতটা সফল হতে পারবো তা জানি না। আমি খুব বেশি দিনের জন্য আসিনি, তবে আমার চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।”

বারটান পরিদর্শনের আগে উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার থানা পরিদর্শন করেন। বারটানে পৌঁছানোর পর তিনি প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন কার্যক্রম ঘুরে দেখেন।

এ সময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন জেলার প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম, পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার এবং বারটানের নির্বাহী পরিচালক রেহেনা আকতারসহ অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ।