গাজা নয়, ইসরায়েলের প্রধান যুদ্ধক্ষেত্র এখন ইরান: ব্যাপক বিমান হামলা অব্যাহত

শনিবার ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ঘোষণা করেছে, গাজা উপত্যকাকে ছাপিয়ে এখন ইরান তাদের প্রধান যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। ইরানি ভূখণ্ডজুড়ে ইসরায়েলি বিমান হামলা তীব্রতর হওয়ার মধ্যেই এই ঘোষণা এলো।

ইসরায়েলের পতাকা

ইসরায়েলের পত্রিকা হারেৎজ-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সামরিক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে গত ২৪ ঘণ্টায় বিমানবাহিনীর জেট বিমানগুলো ইরানের অভ্যন্তরে প্রায় ১৫০টি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে। সেনাবাহিনী আরও দাবি করেছে, তারা ‘ইরানের রাজধানী তেহরানের জন্য একটি নিরাপদ রুট তৈরি করেছে এবং এখন তারা এর আকাশসীমায় অবাধে বিচরণ করতে সক্ষম।’

সেনাবাহিনীর মতে, এই অগ্রাধিকার পরিবর্তনের মূল উদ্দেশ্য হলো ‘যত দ্রুত সম্ভব জিম্মিদের ফিরিয়ে আনা’। উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর থেকে এসব জিম্মিরা গাজায় আটক রয়েছে।

ইসরায়েলের ধারণা, এখনো ৫৪ জন জিম্মি গাজায় রয়েছেন, যাদের মধ্যে ২০ জন জীবিত আছেন বলে মনে করা হচ্ছে। অন্যদিকে, ফিলিস্তিনি ও ইসরায়েলি মানবাধিকার সংস্থাগুলোর তথ্যমতে, ১০,১০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি ইসরায়েলের কারাগারে অমানবিক অবস্থায় বন্দী রয়েছেন। তাদের ওপর নির্যাতন, অনাহারে রাখা এবং চিকিৎসা অবহেলার মতো গুরুতর অভিযোগ রয়েছে।

ইসরায়েলি বাহিনীর উদ্ধৃতি দিয়ে আরও বলা হয়েছে যে তারা ‘হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে’, যদিও সংগঠনটি বর্তমানে যুদ্ধের জন্য কোনো প্রস্তুতি নিচ্ছে না।

এর আগে শুক্রবার ভোরে ইসরায়েল ইরানে বড় আকারের বিমান হামলা শুরু করে। এই হামলায় পারমাণবিক স্থাপনা, ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটি, জ্যেষ্ঠ সামরিক কমান্ডার এবং পরমাণু বিজ্ঞানীরা লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হন। হামলার পরপরই ইসরায়েলের চিফ অফ স্টাফ ইয়াল জামির এবং বিমানবাহিনী কমান্ডার তোমের বার তেহরানে নতুন বিমান হামলার ঘোষণা দিয়ে বলেন, ‘ইরানে যাওয়ার পথ এখন প্রশস্ত।’

শুক্রবার সন্ধ্যায় পাল্টা জবাব হিসেবে ইরানও একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালায়।

ইরানের দাবি, শনিবার পর্যন্ত টানা দ্বিতীয় দিনের ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৭৮ জন নিহত এবং ৩২০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।