নিজ নাগরিকদের দেশত্যাগে ইসরায়েলের নজিরবিহীন নিষেধাজ্ঞা

ইরানের সঙ্গে তীব্র উত্তেজনার মধ্যে হাজার হাজার ইসরায়েলি নাগরিক দেশ ছাড়তে চাইলেও তাদের ওপর সাময়িক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর প্রশাসন। পাল্টা ইরানি হামলার আশঙ্কায় বিমানবন্দরগুলোতে অতিরিক্ত ভিড় ও ব্যাপক প্রাণহানি এড়াতে এই কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে সরকারিভাবে জানানো হয়েছে।

ইসরায়েল সরকার বেন-গুরিয়ন বিমানবন্দরের সব কার্যক্রম স্থগিত করেছে

মিডলইস্ট মনিটরের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সর্বোচ্চ নিরাপত্তা সতর্কতার অংশ হিসেবে ইসরায়েল এই নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। দেশের সব অভ্যন্তরীণ এয়ারলাইন্সকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, পরবর্তী ঘোষণা না আসা পর্যন্ত কোনো ইসরায়েলি নাগরিককে যেন দেশত্যাগের ফ্লাইটে উঠতে না দেওয়া হয়।

ইসরায়েলি দৈনিক হারেৎজের বরাত দিয়ে খবরে আরও বলা হয়, তেল আবিবের বেন-গুরিয়ন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকে ‘পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত’ বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের আশঙ্কা, ইরান যদি বিমানবন্দরগুলোর ওপর পাল্টা হামলা চালায়, তাহলে ব্যাপক প্রাণহানির ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।

ইসরায়েলের পরিবহনমন্ত্রী মিরি রেগেভ এক বিবৃতিতে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘এই মুহূর্তে আমরা ইসরায়েলি নাগরিকদের বিদেশ ভ্রমণের অনুমতি দিচ্ছি না।’ তবে, এই নিষেধাজ্ঞা কূটনীতিক এবং বিদেশি পর্যটকদের জন্য প্রযোজ্য হবে না; কেবল তাদেরকেই ইসরায়েল ছাড়ার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে।

একইসঙ্গে তিনি জানান, সরকার বিদেশে অবস্থানরত প্রায় এক লক্ষ ইসরায়েলিকে দেশে ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনা করছে। রেগেভ বলেন, ‘এই প্রক্রিয়াটি পর্যায়ক্রমে এবং পরিকল্পিতভাবে সম্পন্ন করা হবে।’

উল্লেখ্য, ইরানের মাশহাদ বিমানবন্দরে ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলার পরই নাগরিকদের ওপর এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলো। যদিও ইরান এখনো ইসরায়েলের বিমানবন্দর অবকাঠামোতে কোনো পাল্টা হামলা চালায়নি, তবে এমন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলো ইরানের পরবর্তী লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হতে পারে বলে আশঙ্কা জোরদার হচ্ছে। সরকারের এই সিদ্ধান্তে ইসরায়েলের ভেতরেই তীব্র সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।