মার্কিন নিশানায় ইরানের ফোরদো: ‘বাঙ্কার-বাস্টার’ দিয়ে হামলার পরিকল্পনা, অপেক্ষা চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের

ইরানের সবচেয়ে সুরক্ষিত ও ভূগর্ভস্থ পারমাণবিক স্থাপনা ‘ফোরদো’ ধ্বংস করার সক্ষমতা যুক্তরাষ্ট্রের রয়েছে। এজন্য তারা বিশেষভাবে তৈরি ‘বাঙ্কার-বাস্টার’ বোমা ব্যবহার করার পরিকল্পনা করেছে এবং মার্কিন কর্মকর্তারা আত্মবিশ্বাসী যে এই পরিকল্পনা কাজ করবে। বুধবার মার্কিন নিউজ সাইট এক্সিওস দেশটির কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য জানিয়েছে।

ছবি - সিএনএন

এই পরিকল্পনার কেন্দ্রে রয়েছে ৩০,০০০ পাউন্ড ওজনের ম্যাসিভ অর্ডন্যান্স পেনিট্রেটর (এমওপি) বোমা, যা ‘বাঙ্কার-বাস্টার’ নামে পরিচিত। এটি বিশেষভাবে ভূগর্ভস্থ সুরক্ষিত লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে।

এক্সিওসকে একজন ঊর্ধ্বতন মার্কিন কর্মকর্তা বলেছেন, “‘বাঙ্কার-বাস্টার বোমাটি কাজ করবে। এটি আমাদের সক্ষমতার বাইরের কোনো বিষয় নয়। আমাদের সেই সক্ষমতা আছে।” তবে তিনি আরও বলেন, “সম্ভাব্য হামলার জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ পরিকল্পনা রয়েছে। ব্যাপারটা এমন নয় যে শুধু একটি বোমা ফেলেই বিজয় ঘোষণা করা হবে।”

প্রতিবেদন অনুসারে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার সামরিক উপদেষ্টাদের কাছে সরাসরি এই বোমার কার্যকারিতা এবং এটি ফোরদো পারমাণবিক কেন্দ্রকে নিষ্ক্রিয় করতে পারবে কি না, তা জানতে চেয়েছিলেন। পেন্টাগনের কর্মকর্তারা এই পরিকল্পনার বিষয়ে আত্মবিশ্বাস প্রকাশ করলেও প্রেসিডেন্ট চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেননি।

ফোরদো পারমাণবিক কেন্দ্রটি ইরানের একটি ভূগর্ভস্থ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ স্থাপনা। এটিকে দেশের সবচেয়ে গভীর এবং সুরক্ষিত পারমাণবিক কেন্দ্র হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যা প্রচলিত বিমান হামলা প্রতিরোধ করার জন্য বিশেষভাবে নির্মিত।

এদিকে, ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জাচি হানেগবি মঙ্গলবার স্থানীয় সংবাদমাধ্যম চ্যানেল ১২-কে বলেছেন, “ফোরদো পারমাণবিক স্থাপনার ক্ষতি না করে ইরানের ওপর ইসরায়েলের হামলা শেষ হবে না।” হানেগবি আরও জানান, ইসরায়েল যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে, তবে কোনো অভিযানে যোগ দেওয়ার জন্য ওয়াশিংটনকে রাজি করানোর চেষ্টা করছে না।

যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা প্রস্তুত থাকলেও এখনই হামলার প্রয়োজন আছে বলে মনে করছে না। একজন মার্কিন কর্মকর্তা এক্সিওসকে বলেন, “আমরা ইরানে হামলা চালানোর জন্য প্রস্তুত থাকব। তবে এই মুহূর্তে এটি প্রয়োজনীয় কিনা, সে বিষয়ে আমরা এখনো নিশ্চিত নই। প্রেসিডেন্ট এখনও মনে করছেন না যে আমাদের হস্তক্ষেপ করার প্রয়োজন আছে।”