এরদোয়ানকে হুমকি: প্রভাবশালী তুর্কি সাংবাদিক ফাতিহ আলতায়লি আটক

প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হুমকি দেওয়ার অভিযোগে তুরস্কে প্রখ্যাত সাংবাদিক ও ইউটিউবার ফাতিহ আলতায়লিকে আটক করা হয়েছে। শনিবার ইস্তাম্বুল প্রসিকিউটরের কার্যালয় এক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

ফাতিহ আলতায়লি

ইউটিউবে ফাতিহ আলতায়লির সাবস্ক্রাইবারের সংখ্যা ১৫ লাখেরও বেশি। শুক্রবার তিনি তার চ্যানেলে একটি ভিডিও প্রকাশ করেন। সেখানে তিনি নাম উল্লেখ না করে একটি জরিপের বরাত দিয়ে বলেন, তুরস্কের ৭০ শতাংশ মানুষ এরদোয়ানের আজীবন শাসকের পদে থাকার বিরোধী এবং তুর্কি জনগণ এটি ‘কখনোই হতে দেবে না’।

আলোচিত ওই ভিডিওতে তিনি অতীত উসমানীয় শাসকদের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, জনগণ অতীতে শাসকদের ‘পানিতে ডুবিয়’', ‘হত্যা’ কিংবা ‘গুপ্তহত্যা’ করেছে। তার এই মন্তব্যের পরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তীব্র প্রতিক্রিয়া শুরু হয়। এরদোয়ানের একজন সহযোগী ওকতাই সারাল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) আলতায়লিকে উদ্দেশ্য করে লেখেন, তার ‘পানি গরম হয়ে উঠছে’, যা একটি প্রচ্ছন্ন হুমকি হিসেবেই দেখা হচ্ছে।

ইস্তাম্বুল প্রসিকিউটরের কার্যালয় তাদের বিবৃতিতে জানিয়েছে, আলতায়লির মন্তব্যে প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে ‘হুমকি রয়েছে’ এবং এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে একটি তদন্ত শুরু করা হয়েছে। তবে এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য আলতায়লির আইনজীবীর সঙ্গে তাৎক্ষণিকভাবে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে তুরস্কে বিরোধী দলের নেতা-কর্মী ও সরকারের সমালোচকদের আটকের ঘটনা বাড়ছে। এরদোয়ানের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে পরিচিত ইস্তাম্বুলের মেয়র একরেম ইমামোগলুকেও গত মার্চ মাসে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।

প্রধান বিরোধী দল সিএইচপি’র অভিযোগ, সরকার ভিন্নমত দমন এবং আসন্ন নির্বাচনে সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ দূর করতে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এসব গ্রেপ্তার ও আটক অভিযান চালাচ্ছে। তাদের মতে, এটি গণমাধ্যম ও বিরোধী কণ্ঠকে স্তব্ধ করার একটি পরিকল্পিত পদক্ষেপ।

তবে তুর্কি সরকার বরাবরই এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। তাদের দাবি, তুরস্কের বিচার বিভাগ এবং আদালত সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে কাজ করে।

উল্লেখ্য, এর আগেও তুর্কি কর্তৃপক্ষ বিরোধী রাজনীতিবিদ, বিশেষ করে কুর্দিপন্থী স্থানীয় নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যাপক ধরপাকড় চালিয়েছে। সরকারের ভাষ্যমতে, একটি দুর্নীতির চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে এ পর্যন্ত ১৫০ জনেরও বেশি ব্যক্তিকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে, যদিও সিএইচপি এই অভিযোগকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে আখ্যা দিয়েছে।