তুরস্ক: ইসরায়েল মধ্যপ্রাচ্যকে ‘সম্পূর্ণ ধ্বংসের’ দিকে নিয়ে যাচ্ছে

শনিবার ইস্তাম্বুলে অনুষ্ঠিত ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) জরুরি সম্মেলনে ইসরায়েলের তীব্র সমালোচনা করেছে তুরস্ক। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান ইরানের ওপর সাম্প্রতিক ইসরায়েলি হামলাকে পুরো মধ্যপ্রাচ্যকে ‘সম্পূর্ণ ধ্বংসের’ দিকে ঠেলে দেওয়ার ষড়যন্ত্র হিসেবে অভিহিত করেছেন। আরব নিউজের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান কথা বলছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচির সঙ্গে

সম্মেলনে হাকান ফিদান বলেন, ‘গত ১২ জুন আমাদের প্রতিবেশী ইরানে ইসরায়েলের হামলা পুরো অঞ্চলকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে। ফিলিস্তিন, লেবানন, সিরিয়া বা ইয়েমেন কোনো সমস্যা নয়—মূল সমস্যা হলো ইসরায়েল নিজেই।’ তিনি এই ‘সীমাহীন আগ্রাসন’ বন্ধের আহ্বান জানিয়ে আরও বলেন, ‘এই সহিংসতার চক্র অবশ্যই রোধ করতে হবে, যা আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক নিরাপত্তাকে মারাত্মক হুমকির মুখে ফেলেছে।’

ওআইসি সম্মেলনে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানও ইসরায়েলের প্রতি পশ্চিমা দেশগুলোর ‘নিঃশর্ত সমর্থন’ দেওয়ার কঠোর সমালোচনা করেন। তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যের সীমানা রক্ত দিয়ে পুনরায় আঁকার যে প্রচেষ্টা চলছে, তুরস্ক তা কখনোই মেনে নেবে না। ফিলিস্তিন, সিরিয়া, লেবানন ও ইরানে ইসরায়েলের দস্যুতার বিরুদ্ধে আমাদের একযোগে লড়তে হবে।’

প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান তার বক্তব্যে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সমালোচনা করে বলেন, ‘গাজায় গণহত্যা ও ইরানে হামলার নেপথ্যে পশ্চিমাদের সরাসরি সমর্থন কাজ করছে।’ তিনি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক অবরোধসহ কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তাব দেন।

সম্মেলনে ভিডিও বার্তার মাধ্যমে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আবদোল্লাহিয়ান বলেন, ‘ইসরায়েলি আগ্রাসন রুখতে মুসলিম দেশগুলোর ঐক্যবদ্ধ পদক্ষেপ জরুরি।’ তবে সৌদি আরব ও কাতারের মতো প্রভাবশালী দেশগুলো উত্তেজনা না বাড়িয়ে কূটনৈতিক সমাধানের ওপরই বেশি জোর দিয়েছে।

প্রসঙ্গত, ইসরায়েল-ইরান উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে আয়োজিত এই সম্মেলনে সদস্য দেশগুলোর মধ্যে সুস্পষ্ট বিভাজন দেখা যায়। ফলে সংস্থাটি কোনো দৃঢ় ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেনি বলে জানা গেছে।