ন্যাটোকে সুরক্ষা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি নিয়ে ট্রাম্পের রহস্যময় মন্তব্য, বাড়ছে উদ্বেগ

হেগে অনুষ্ঠিতব্য ন্যাটো শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেওয়ার পথে জোটের যৌথ প্রতিরক্ষা নীতি নিয়ে সুস্পষ্ট কোনো প্রতিশ্রুতি দিতে অস্বীকার করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মঙ্গলবার বিমানে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ন্যাটোর মূল ভিত্তি ‘অনুচ্ছেদ ৫’ নিয়ে তিনি এক রহস্যময় মন্তব্য করেন, যা মিত্র দেশগুলোর মধ্যে নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।

ডোনাল্ড ট্রাম্প

ন্যাটোর চুক্তির অনুচ্ছেদ ৫ অনুযায়ী, জোটভুক্ত কোনো একটি দেশের ওপর আক্রমণ হলে তা সব সদস্য দেশের ওপর আক্রমণ হিসেবে গণ্য হবে এবং সবাই মিলে তা প্রতিহত করবে। এই ধারাটির প্রতি তার প্রতিশ্রুতির বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে ট্রাম্প বলেন, ‘এটি আপনার সংজ্ঞার ওপর নির্ভর করে। অনুচ্ছেদ পাঁচের অনেকগুলো সংজ্ঞা রয়েছে। আপনি তো সেটা জানেন, তাই না?’

সাংবাদিকরা এ বিষয়ে আরও স্পষ্ট ব্যাখ্যা চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলেন, ‘আমি জীবন বাঁচাতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমি জীবন ও নিরাপত্তার পক্ষে। আমি যখন সেখানে পৌঁছাব, তখন আপনাদের একটি সুনির্দিষ্ট সংজ্ঞা দেবো। আমি বিমানের পেছনে বসে কাজটি করতে চাই না।’

এ সময় ট্রাম্প ন্যাটোর সদস্য দেশগুলোর আর্থিক অনুদান নিয়েও কথা বলেন। তিনি দাবি করেন, নয় বছর আগে যখন তিনি প্রথম জোটের সঙ্গে যুক্ত হন, তখন সদস্যরা ‘তাদের নির্ধারিত চাঁদা পরিশোধ করছিল না।’ তিনি বলেন, ‘২৮টি দেশের মধ্যে মাত্র সাতটি দেশ চাঁদা দিচ্ছিল, কিন্তু সেটাও খুব বেশি নয়।’ সে সময় ন্যাটোকে একটি ‘ভগ্নদশাগ্রস্ত’ জোট হিসেবেও তিনি আখ্যা দেন।

নিজের কৃতিত্ব দাবি করে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি বলেছিলাম, আপনাদের অর্থ পরিশোধ করতে হবে এবং আমরা একটি পুরো ব্যবস্থা তৈরি করেছিলাম, আর এখন তারা অনেক অর্থ দিচ্ছে।’

তিনি জোটের সদস্যদের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ‘৪% বা ৫%’ পর্যন্ত প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয়ের জন্য চাপ দেন। তার মতে, উচ্চ অনুদান ‘তাদের আরও বেশি শক্তি জোগাবে’ এবং ঐক্যের মাধ্যমে ‘শক্তিশালী ও উন্নত শান্তি’ প্রতিষ্ঠা করবে।

এদিকে, ন্যাটো মহাসচিব মার্ক রুটে মঙ্গলবার এক বার্তায় ট্রাম্পকে জানিয়েছেন যে, জোটের সকল সদস্য ৫% প্রতিরক্ষা ব্যয়ের লক্ষ্যে সম্মত হয়েছে।

তবে মিত্র দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষায় নিজের অঙ্গীকারের কথা জানিয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি তাদের বন্ধু হতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং আমি অনেক নেতার সঙ্গেই বন্ধুত্ব স্থাপন করেছি।’

আলাদাভাবে, ট্রাম্প তার নিজস্ব সামাজিক মাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যালে’ জানিয়েছেন যে তিনি ন্যাটো সম্মেলনের পথে রয়েছেন, যা ‘ইসরায়েল এবং ইরানের সাথে যা কিছুর মধ্যে দিয়ে গিয়েছি, তার চেয়ে অনেক শান্ত একটি সময় হবে।’ তিনি মিত্রদের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য উন্মুখ বলেও জানান এবং আশা প্রকাশ করেন যে এই সম্মেলনে অনেক কিছু অর্জিত হবে।