গাজায় ত্রাণপ্রত্যাশীদের ওপর ফের হামলা, নিহত ৩৭

গাজা উপত্যকায় শুক্রবার সকাল থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর লাগাতার হামলায় অন্তত ৩৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। চিকিৎসা সূত্রের বরাতে সংবাদ সংস্থা আনাদোলু জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে ১৫ জনই ছিলেন মানবিক সহায়তার জন্য অপেক্ষারত বেসামরিক নাগরিক।

ফাইল ছবি

দিনের সবচেয়ে ভয়াবহ ঘটনাগুলোর একটি ঘটে দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসের পূর্বাঞ্চলে। সেখানে আল-তাহলিয়া চত্বরের কাছে খাবারের জন্য অপেক্ষারত জনতার ওপর হামলা চালালে ১৫ জন নিহত এবং আরও ৯০ জন আহত হন।

খান ইউনিসের পশ্চিমে আল-মাওয়াসি এলাকায় তিবা টাওয়ারের কাছে বাস্তুচ্যুতদের একটি তাঁবুতে হামলায় আটজন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, নিহতদের অধিকাংশই একই পরিবারের সদস্য। এছাড়া, ব্রিটিশ ফিল্ড হাসপাতালের কাছে অপর এক হামলায় দুই শিশুসহ আরও তিনজন নিহত হন। খান ইউনিস সমুদ্রসৈকতেও দুটি তাঁবুতে বিমান হামলায় চারজন বেসামরিক নাগরিক প্রাণ হারান, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।

ফিলিস্তিনি সংবাদ সংস্থা ওয়াফা জানিয়েছে, দক্ষিণ গাজার রাফাহ শহরের আল-মাওয়াসি এলাকায় বাস্তুচ্যুত বেসামরিক নাগরিকদের তাঁবুতেও ইসরায়েলি গোলন্দাজ বাহিনী হামলা চালায়, এতে আরও হতাহতের ঘটনা ঘটে।

মধ্য গাজার আল-বুরেইজ শরণার্থী শিবিরে একটি বাড়িতে রাতভর অভিযানে চারজন এবং দক্ষিণ গাজা শহরের আল-সাবরা এলাকায় অপর একটি বাড়িতে হামলায় আরও তিনজন নিহত হয়েছেন।

ইসরায়েলি বাহিনী বাস্তুচ্যুতদের আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত একটি বিদ্যালয়েও আঘাত হেনেছে, তবে সেখান থেকে হতাহতের তাৎক্ষণিক কোনো খবর পাওয়া যায়নি। প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানিয়েছেন, উত্তর খান ইউনিসে একাধিক আবাসিক ভবন গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখযোগ্য যে, এই হামলার মাত্র একদিন আগেই গাজা উপত্যকাজুড়ে শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছিলেন, যাদের মধ্যে ৫১ জনই ছিলেন ত্রাণপ্রত্যাশী।

আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যুদ্ধবিরতির আহ্বান সত্ত্বেও ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় তাদের অভিযান অব্যাহত রেখেছে। গত বছরের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই অভিযানে এ পর্যন্ত ৫৭,১০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। এই পরিস্থিতিতে, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গত নভেম্বরে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এবং তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। এছাড়া, হেগের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতেও (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালানোর অভিযোগ বিচারাধীন রয়েছে।