ক্ষমতা গ্রহণের এক মাসেই লি জে-মিয়ং-এর জনপ্রিয়তা তুঙ্গে

দক্ষিণ কোরিয়ায় গত ৩ জুন অনুষ্ঠিত নির্বাচনে জয়ী হয়ে রাষ্ট্রক্ষমতায় বসার দ্বিতীয় মাসেই জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট লি জে-মিয়ং। সম্প্রতি প্রকাশিত এক জরিপে দেখা গেছে, ৬১ বছর বয়সী এই নেতার কর্মকাণ্ডকে ৬৫ শতাংশ নাগরিক সমর্থন জানিয়েছেন।

লি জে-মিয়ং

গ্যালাপ কোরিয়ার পরিচালিত জরিপটি জুলাই মাসের প্রথম তিন দিন ধরে চালানো হয়, যেখানে ১,০০১ জন নাগরিকের মতামত নেওয়া হয়। জরিপের ফলাফল অনুযায়ী, লি জে-মিয়ং-এর কাজে দেশের ৬৫ শতাংশ মানুষ সন্তুষ্ট। অন্যদিকে, তার কর্মকাণ্ডে ২৩ শতাংশ নাগরিক অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

লি জে-মিয়ং-এর তুমুল জনপ্রিয়তার প্রভাব পড়েছে তার দল ডেমোক্রেটিক পার্টির ওপরও। দলটির জনসমর্থন বেড়ে ৪৬ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এর বিপরীতে, প্রধান বিরোধী দল পিপল পাওয়ার পার্টির (পিপিপি) জনপ্রিয়তা ২২ শতাংশে নেমে এসেছে।

উল্লেখ্য, পূর্বসূরি ইউন সুক ইওল গত ৩ ডিসেম্বর সামরিক আইন জারির একটি ব্যর্থ চেষ্টা করলে তাকে অভিশংসনের মাধ্যমে পদচ্যুত করা হয়। এরপর অনুষ্ঠিত অকাল নির্বাচনে জয়ী হয়ে ক্ষমতায় আসেন লি জে-মিয়ং।

বৃহস্পতিবার নিজের প্রথম আনুষ্ঠানিক ও বিস্তারিত সংবাদ সম্মেলনে লি জে-মিয়ং তার সরকারের ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরেন। সেখানে তিনি আন্তঃ-কোরীয় সংলাপের ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং জনগণের জীবনযাত্রা সুরক্ষিত করার পাশাপাশি তার সরকারের ‘বাস্তবসম্মত’ কূটনীতির কথা পুনর্ব্যক্ত করেন। দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই তিনি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ঋণ মকুবের ঘোষণা দিয়েছেন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দেশের অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর শুল্ক নিয়ে আলোচনা শুরু করেছেন।

ব্লু হাউসে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে রাষ্ট্রপতির কার্যালয় স্থানান্তরের জন্য বর্তমানে সংস্কারকাজ চলছে। পূর্ববর্তী প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল ব্লু হাউস ত্যাগ করে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি ভবন থেকে দাপ্তরিক কার্যক্রম পরিচালনা করতেন।

প্রায় দুই ঘণ্টার বেশি সময় ধরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে লি জে-মিয়ং একবারও তার পূর্বসূরি ইউনের নাম উল্লেখ না করে দলমত নির্বিশেষে সহযোগিতার ওপর জোর দেন।

তবে একই দিনে বিরোধী দল পিপিপির সংসদ সদস্যরা সংসদ অধিবেশন থেকে মাঝপথে বেরিয়ে যান। এরপরই লি জে-মিয়ং-এর মনোনীত প্রধানমন্ত্রী কিম মিন-সিওকের নিয়োগ অনুমোদন করে সংসদ।

সংবাদ সম্মেলনে লি জে-মিয়ং কর্মদিবস সপ্তাহে সাড়ে চার দিনে নামিয়ে আনার বিষয়েও আলোচনা করেন। এসময় তিনি নিজের শৈশবের স্মৃতিচারণ করে বলেন, পরিবারকে সাহায্য করতে তাকে একটি কারখানায় কাজ করতে হয়েছিল। তিনি বলেন, “শুরুতে আমরা পুরো মাসে একদিনও ছুটি পেতাম না। তারপর মাসে একদিন... তারপর মাসে দুই দিন... এবং শেষে সপ্তাহে একদিন ছুটি দেওয়া শুরু হলো।” তিনি আরও যোগ করেন, “এসব পরিবর্তনে সময় লাগে।”