গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তির দ্বারপ্রান্তে, জানালেন মার্কিন দূত

গাজা উপত্যকায় ৬০ দিনের একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি চলতি সপ্তাহান্তের মধ্যেই সম্পাদিত হতে পারে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন শান্তি মিশনের জন্য নিযুক্ত মার্কিন বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ। মঙ্গলবার পরোক্ষ আলোচনায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হওয়ায় তিনি এই আশা প্রকাশ করেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে এক মন্ত্রিসভার বৈঠকে উইটকফ বলেন, “আমাদের সামনে চারটি অমীমাংসিত বিষয় ছিল, কিন্তু দুই দিনের পরোক্ষ আলোচনার পর এখন মাত্র একটি বিষয় বাকি আছে।” তিনি আরও যোগ করেন, “সুতরাং, আমরা আশাবাদী যে এই সপ্তাহান্তের মধ্যেই আমরা একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে পারব, যা আমাদের ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির দিকে নিয়ে যাবে।”

উইটকফ জানান, প্রস্তাবিত এই চুক্তির অধীনে ১০ জন জীবিত এবং ৯ জন মৃত বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হবে। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, এই উদ্যোগ “গাজায় একটি স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা করবে।”

বৈঠকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজার পরিস্থিতিকে একটি “বিয়োগান্তক ঘটনা” হিসেবে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠকে তিনি “প্রায় একচেটিয়াভাবে” এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবেন। ট্রাম্প আরও বলেন যে তিনি, নেতানিয়াহু এবং হামাসকে ইঙ্গিত করে “অপর পক্ষ”—সকলেই “বিষয়টির সমাধান করতে চান।”

তবে দিনের শুরুতে মার্কিন কংগ্রেসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ভিন্ন সুর শোনা যায় নেতানিয়াহুর কণ্ঠে। তিনি বলেন, “আমাদের এখনও গাজায় কাজ শেষ করতে হবে, আমাদের সকল বন্দিকে মুক্ত করতে হবে এবং হামাসের সামরিক ও প্রশাসনিক সক্ষমতা নির্মূল ও ধ্বংস করতে হবে। কারণ আমাদের নিজেদের স্বার্থে এবং সকলের স্বার্থে গাজার একটি ভিন্ন ভবিষ্যৎ রচনা করা আবশ্যক।”

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের অক্টোবর মাস থেকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর হামলায় গাজায় ৫৭,৫০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। অবিরাম বোমাবর্ষণে অবরুদ্ধ উপত্যকাটি প্রায় ধ্বংস হয়ে গেছে এবং এর ফলে তীব্র খাদ্য সংকট ও রোগের বিস্তার ঘটেছে।

গত বছরের নভেম্বরে, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গাজায় যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগে নেতানিয়াহু এবং তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। এছাড়া, উপত্যকায় চালানো যুদ্ধের জন্য ইসরায়েল আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) গণহত্যার মামলারও সম্মুখীন।