বাজারে ঢুকছে প্লাস্টিকের ডিম, চিনবেন কীভাবে?

পুষ্টিকর খাবার হিসেবে ডিম অত্যন্ত জনপ্রিয়। ডিমে রয়েছে বেশ কিছু পুষ্টি উপাদান, যা দেহের ক্যালরি সরবরাহ থেকে শুরু করে নানা খাদ্যপ্রাণও সরবরাহ করে। বেশ কয়েক বছর ধরে নকল ডিমের খবর ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকে নকল ডিমকে গুজব বললেও এবার সত্যি সত্যি ধরা পড়েছে প্লাস্টিকের নকল ডিম।

ভারতের হুগলি, কলকাতার বেশ কয়েকটি বাজার থেকে প্লাস্টিকের ডিমসহ দোকানীকে আটক করেছে পুলিশ। বর্ধমানসহ বেশ কয়েকটি জেলা থেকে নকল ডিম বিক্রেতাদের আটক করা হয়েছে।

গোয়ান্দা পুলিশ খুঁজে বেরাচ্ছে দুজন ডিলারকে। ধারণা করা হচ্ছে ওই দুজন ডিলার চীন থেকে নকল ডিম আমদানি করেন। কলকাতার শহর ও গ্রামের দোকান থেকে নকল ডিম উদ্ধারের পর থেকে সীমান্ত অঞ্চলে নকল ডিম পাচার ও প্রবেশের উপর কড়াকড়ি আরোপ করেছে রাজ্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রাণালয়। ধারণা কারা হচ্ছে নকল প্লাস্টিক ডিম ভারত হয়ে বাংলাদেশের বাজারেও প্রবেশ করতে পারে।

ইন্ডিয়া টুডের এক খবরে বলা হয়েছে, গত ২৯ মার্চ বুধবার কলকাতার জলার এক বাসিন্দা রাধা গোবিন্দ সাহা লেনের একটি ডিমের দোকান থেকে কয়েক ডজন ডিম কেনেন। অনিতা কুমার নামের এক মহিলা ওই ডিম কেনার পর পরদিন সকালে তার স্বামী-সন্তানকে নাস্তায় ডিম ভেজে দিতে যেয়ে লক্ষ করলেন ডিমের কুসুম হালকা প্লাস্টিকের আবরণে মোড়ানো। কড়াইতে দিতেই তিনি প্লাস্টিক পোড়া গন্ধ পান। ভাল মতো যাচাই করার জন্য তিনি অন্য একটি প্লেটে আরো কয়েকটি ডিম ভেঙ্গে দেখলেন সেগুলোতেও প্লাস্টিকের আবরণ রয়েছে। তিনি মোমবাতি জ্বালিয়ে প্লাস্টিকের আবরণ পোড়ানোর চেষ্টা করতেই ফের প্লাস্টিক পোড়া গন্ধ পান।

এ ঘটনার পর গত ৩০ মার্চ বৃহস্পতিবার অনিতা কুমার তার স্বামীকে নিয়ে সরাসরি চলে যান তিলজলা থানায়। সেখানে যেয়ে তিনি পুলিশের কাছে তার অভিযোগ জানান। জিনিউজ বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, এসব নকল ডিম স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। কারণ প্রচুর রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করে প্লাস্টিকের নকল ডিম তৈরি করা হয়। নকল ডিম নিয়ে এখন ভারতজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়ে গেছে। প্রতিবেশি দেশ হিসেবে সতর্ক থাকতে হবে বাংলাদেশের ভোক্তাদেরও।

প্লাস্টিকের ডিম চেনার কয়েকটি উপায়:

১. ডিম ভাঙার পর সাদা অংশ ও কুসুম এক হয়ে যায়।
২. ডিম ঝাঁকালে পানি গড়ানোর মতো শব্দ হয়।
৩. এর খোলস বেশি শক্ত ও পুরু। খোলের ভেতর রাবারের মতো লাইন থাকে।
৪. আসল ডিম ভাঙলে মুড়মুড়ে শব্দ হয়। কিন্তু প্লাস্টিকের ডিমে তেমন শব্দ হয় না।
৫. সাধারণ ডিমের চেয়ে এই ডিম বেশি ঝকঝকে। নকল ডিমের ওজনও থাকে বেশি।
৬. আসল ডিম ভেঙে রেখে দিলে পিঁপড়া বা পোকামাকড় আসে। কিন্তু নকল ডিমে পোকামাকড় আসে না।
৭. প্লাস্টিকের ডিমে কোনো গন্ধ থাকে না। তবে আগুনে বা কড়াইতে দিলে হালকা প্লাস্টিক পোড়ার গন্ধ আসে।