‘তোমরা নিশ্চয়ই আমার সঙ্গে রসিকতা করছ’, এপস্টিন প্রসঙ্গে ক্ষুব্ধ ট্রাম্প

বিতর্কিত ধনকুবের জেফরি এপস্টিনের সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পুরোনো মুহূর্তের ভিডিও এবং ছবি প্রকাশ করেছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন। মঙ্গলবার প্রকাশিত এই আর্কাইভ ফুটেজে ট্রাম্পের বিয়েতে এপস্টিনের উপস্থিতি এবং একটি ফ্যাশন অনুষ্ঠানে দুজনের খোশগল্পের দৃশ্য দেখা গেছে, যা নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

সিএনএনের একটি বিশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯৯৩ সালে নিউইয়র্কের প্লাজা হোটেলে মার্লা মেপলসের সঙ্গে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিয়ের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেফরি এপস্টিন। প্রকাশিত ছবিতে তাকে সেই অনুষ্ঠানে দেখা গেছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ১৯৯৯ সালে নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত ভিক্টোরিয়া'স সিক্রেট ফ্যাশন অনুষ্ঠানের একটি ভিডিওতে ট্রাম্প ও এপস্টিনকে অনুষ্ঠানের আগে হাসাহাসি ও খোশগল্প করতে দেখা গেছে। এপস্টিনের সঙ্গে ট্রাম্পের অতীত সম্পর্ক নিয়ে যখন চুলচেরা বিশ্লেষণ বাড়ছে, ঠিক তখনই এই প্রতিবেদনটি সামনে এলো।

এই ছবিগুলো সম্পর্কে সিএনএনের পক্ষ থেকে জানতে চাওয়া হলে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রথমে বলেন, ‘তোমরা নিশ্চয়ই আমার সঙ্গে রসিকতা করছ’। এরপর তিনি সংবাদমাধ্যমটিকে বারবার ‘ভুয়া সংবাদ’ বলে আখ্যা দিয়ে টেলিফোন সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।

হোয়াইট হাউসের যোগাযোগ পরিচালক স্টিভেন চেউং এই প্রতিবেদনকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেছেন। তিনি সিএনএনকে বলেন, ‘এগুলো কিছু বিচ্ছিন্ন ভিডিও ও ছবির খণ্ডাংশ ছাড়া আর কিছুই নয়। বহুলোকের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত এসব অনুষ্ঠানের ছবি ব্যবহার করে জঘন্যভাবে একটি হীন উদ্দেশ্য বোঝানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রকৃত ঘটনা হলো, প্রেসিডেন্ট তাকে (এপস্টিনকে) অশিষ্ট আচরণের জন্য নিজের ক্লাব থেকে বের করে দিয়েছিলেন। এটি ডেমোক্র্যাট ও উদারপন্থী গণমাধ্যমের তৈরি ভুয়া সংবাদের ধারাবাহিকতা ছাড়া আর কিছুই নয়।’

এদিকে, এপস্টিন সংক্রান্ত বহু-প্রতীক্ষিত নথি প্রকাশ না করার জন্য বিচার বিভাগের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের ‘মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন’ (মাগা) আন্দোলনের সমর্থকদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। তারা এপস্টিনের সহযোগীদের বিষয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশের আশা করেছিলেন।

উল্লেখ্য, বিচার চলাকালীন ২০১৯ সালের আগস্টে নিউইয়র্কের কারাগারে এপস্টিন আত্মহত্যা করেন। তার মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে ঘোষণা করা হলেও, বিশ্বের বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যক্তির সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের কারণে এ নিয়ে ব্যাপক ষড়যন্ত্র তত্ত্ব ছড়িয়ে পড়ে।

মঙ্গলবার একজন কেন্দ্রীয় বিচারক বিচার বিভাগের কর্মকর্তাদের এক সপ্তাহ সময় দিয়েছেন। এপস্টিন মামলার জুরিসভার সাক্ষ্য কেন প্রকাশ করা হবে না, সে বিষয়ে তাদের আরও তথ্য জানাতে বলা হয়েছে। অন্যদিকে, প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার মাইক জনসন মঙ্গলবার ঘোষণা করেছেন যে তিনি আগস্ট মাসের ছুটির জন্য আগেই অধিবেশন মুলতবি করে দেবেন। এর ফলে এপস্টিনের তদন্ত নথি প্রকাশের জন্য ভোট আয়োজনে ডেমোক্র্যাটদের প্রচেষ্টা বাধাগ্রস্ত হবে বলে মনে করা হচ্ছে।