অথচ জাপানের প্রধানমন্ত্রী বলছেন, ‘পদত্যাগ নিয়ে কোনো কথাই বলিনি’

ক্ষমতাসীন জোট নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারানোর পর নিজের পদত্যাগের গুঞ্জন জোরালোভাবে অস্বীকার করেছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা। বুধবার তিনি স্পষ্ট জানান, পদত্যাগ নিয়ে তিনি কোনো আলোচনা করেননি।

এর আগে দেশটির প্রভাবশালী দৈনিক পত্রিকা মাইনিচি এক প্রতিবেদনে দাবি করে, আগস্ট মাসের শেষ দিকে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) নেতা ইশিবা তার পদত্যাগের ঘোষণা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এই প্রতিবেদনের পরই মূলত তার পদত্যাগের বিষয়টি আলোচনায় আসে।

গত রবিবারের উচ্চকক্ষ নির্বাচনে বড় ধরনের পরাজয়ের পর এলডিপি ও তার জোটসঙ্গী কোমেইতোর ক্ষমতাসীন জোট সংসদের উভয় কক্ষেই সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারায়।

জাপানের সংবাদ সংস্থা কিয়োডো নিউজ জানিয়েছে, এলডিপির নির্বাচনী ফলাফল পর্যালোচনার জন্য বুধবার দলের জ্যেষ্ঠ নেতা তারো আসো, ইয়োশিহিদে সুগা এবং ফুমিও কিশিদার সঙ্গে এক বৈঠকে বসেন ইশিবা। বৈঠক শেষে তিনি বলেন, তিনি পদত্যাগ করবেন কি না, সে বিষয়ে ‘কোনো কথাই বলেননি’।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, তিনি তার দলীয় সহকর্মীদের সঙ্গে একটি ‘গভীর সংকটবোধ’ অনুভব করছেন। বৈঠকে চারজনই লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টিকে ‘ভেঙে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা করার প্রয়োজনীয়তার’ ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদের উচ্চকক্ষের ২৪৮টি আসনের মধ্যে ১২৫টি আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে এলডিপি-কোমেইতো জোট মাত্র ৪৭টি আসন পেয়েছে, যা সংখ্যাগরিষ্ঠতা ধরে রাখার জন্য প্রয়োজনীয় ৫০টি আসনের চেয়ে কম। বর্তমানে উচ্চকক্ষে ক্ষমতাসীন জোটের মোট আসন সংখ্যা ১২২। গত বছর প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনেও ইশিবা মাত্র ২২১ জন আইনপ্রণেতার সমর্থন পেয়েছিলেন, যা ন্যূনতম ২৩৩ ভোটের চেয়ে ১২টি কম ছিল।

ক্ষমতাসীন দলের নির্বাহীদের বরাত দিয়ে কিয়োডো নিউজ জানিয়েছে, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ইশিবার পদত্যাগ ‘অনিবার্য হিসেবেই দেখা হচ্ছে’।

সংবাদ সংস্থাটি আরও জানায়, দলের তরুণ ও মধ্যম সারির আইনপ্রণেতারা ইশিবার জবাবদিহি নিশ্চিত করার জন্য একটি যৌথ বৈঠকের দাবিতে স্বাক্ষর সংগ্রহ শুরু করেছেন। এছাড়া আঞ্চলিক শাখাগুলোতেও বর্তমান নেতৃত্বের প্রতি অসন্তোষ ক্রমশ বাড়ছে।

যদি শিগেরু ইশিবা শেষ পর্যন্ত পদত্যাগ করেন, তবে তার মেয়াদ এক বছরেরও কম হবে। তিনি গত বছরের অক্টোবর মাসে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন।