নাহিদ ইসলাম: ৯০-এর পুনরাবৃত্তি চাই না, জুলাই সনদেই নির্বাচন হতে হবে

আগামী পাঁচ আগস্টের মধ্যে ‘জুলাই সনদ’ ও ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ চূড়ান্ত করার সুস্পষ্ট বার্তা দিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘এর কোনো বিকল্প চলবে না।’ সরকারের প্রকাশিত খসড়াকে অপর্যাপ্ত আখ্যা দিয়ে তিনি পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন দাবি করেছেন।

মঙ্গলবার বিকেলে গাজীপুরের ঐতিহাসিক ভাওয়াল রাজবাড়ী সড়কে আয়োজিত এক পথসভায় এই দাবি জানানো হয়। ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান’ স্মরণে এনসিপির দেশব্যাপী ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে এই পথসভার আয়োজন করা হয়।

নাহিদ ইসলাম তার বক্তব্যে অতীতের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতার কথা স্মরণ করিয়ে দেন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘৯০-এর গণঅভ্যুত্থানের পর নির্বাচনের রূপরেখা তৈরি হলেও রাজনৈতিক দলগুলো জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছিল। এবার আমরা আর সেই প্রতারণার সুযোগ দিতে চাই না।’ তিনি জোর দিয়ে বলেন, আগামী নির্বাচন অবশ্যই জুলাই সনদের ভিত্তিতে হতে হবে এবং নির্বাচিত সরকারকে সেই সনদ বাস্তবায়নে বাধ্য থাকতে হবে।

দেশব্যাপী নিজেদের কর্মসূচির বিস্তৃতি তুলে ধরে এনসিপি আহ্বায়ক বলেন, ‘আমরা গোপালগঞ্জেও গিয়েছি, কেউ থামাতে পারেনি। আজ গাজীপুরেও এসেছি। দেশের প্রতিটি ইঞ্চি মাটিতে আমরা যাব, মুজিববাদ বিতাড়িত করব। মুজিববাদীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।’

‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচিকে শুধু রাজনৈতিক কর্মসূচি হিসেবে না দেখে, নতুন প্রজন্মের কাছে ‘৭১-এর অসাম্প্রদায়িক চেতনা ছড়িয়ে দেওয়ার একটি বিপ্লবী প্রয়াস হিসেবে উল্লেখ করেন এনসিপি নেতারা। তাদের মতে, এই কর্মসূচির মূল লক্ষ্য হলো একটি গণতান্ত্রিক, মানবিক ও বৈষম্যহীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা।

পথসভায় আরও বক্তব্য রাখেন এনসিপির দক্ষিণ অঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক নাহিদ আহসান নিভা, অবসরপ্রাপ্ত মেজর আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ এবং জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিনসহ দলের অন্যান্য কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা।

কালিয়াকৈর থেকে মাওনা হয়ে জয়দেবপুর রাজবাড়ী পর্যন্ত এই পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। শুরুতে কিছুটা নিরাপত্তা উদ্বেগ থাকলেও পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার উপস্থিতিতে পুরো কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়।