সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণের খসড়া প্রকাশ

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণের খসড়া তালিকা প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বুধবার সন্ধ্যায় ইসির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এই খসড়ায় ছোটখাটো পরিবর্তন আনা হয়েছে ৩৯টি আসনে। তবে প্রায় আড়াইশ আসনের সীমানা আগের মতোই রাখা হয়েছে, কারণ এসব আসনের বিষয়ে কোনো আপত্তি বা আবেদন জমা পড়েনি।

নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বুধবার বিকেলে সাংবাদিকদের জানান, কারিগরি কমিটি মোট ৪২টি আসনে পরিবর্তনের সুপারিশ করেছিল। এর মধ্যে কমিশন ৩৯টি আসনের সীমানায় সামান্য পরিবর্তনের প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে। জনসংখ্যা ও ভোটার সংখ্যার তারতম্য বিবেচনায় গাজীপুরে একটি আসন বাড়ানোর এবং বাগেরহাটে একটি আসন কমানোর সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবও এর অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

যেভাবে আপত্তি জানাবেন

প্রকাশিত খসড়া তালিকার বিষয়ে কোনো সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি বা সংশ্লিষ্ট এলাকার বাসিন্দারা তাদের দাবি, আপত্তি বা সুপারিশ জানাতে পারবেন। আগামী ১০ আগস্ট, ২০২৫ (২৬ শ্রাবণ, ১৪৩২) তারিখের মধ্যে নির্বাচন কমিশনে লিখিতভাবে আবেদন জমা দিতে হবে। আবেদনপত্র অবশ্যই পাঁচ প্রস্থে দাখিল করতে হবে এবং নির্দিষ্ট তারিখের পর কোনো আবেদন গ্রহণ করা হবে না বলে বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।

যেসব নীতি অনুসরণ করা হয়েছে

নির্বাচনী এলাকার সীমানা পুনর্নির্ধারণে বেশ কিছু মূলনীতি অনুসরণ করা হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো—প্রশাসনিক অখণ্ডতাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে উপজেলা ও থানাকে যথাসম্ভব অখণ্ড রাখা। পার্বত্য চট্টগ্রামের তিনটি আসনসহ দুই ও তিন আসনবিশিষ্ট জেলাগুলোর সীমানা অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। কারণ, এসব আসনে জনসংখ্যার অনুপাতে পরিবর্তন আনলে অসামঞ্জস্য তৈরি হতো।

এছাড়া, একটি জেলার অধীনে আসনগুলোর মধ্যে ভোটার সংখ্যার ব্যবধান সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা হয়েছে। ইউনিয়ন বা সিটি করপোরেশনের কোনো ওয়ার্ডকে একাধিক সংসদীয় আসনে বিভাজন না করার নীতিও কঠোরভাবে মানা হয়েছে। পাশাপাশি, নতুন সৃষ্ট বা বিলুপ্ত প্রশাসনিক এলাকাগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করা এবং ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য ও যোগাযোগ ব্যবস্থাকে বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে।

এই পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করা হয়েছে ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১১৯’ এবং ‘জাতীয় সংসদের নির্বাচনি এলাকার সীমানা নির্ধারণ আইন, ২০২১’ অনুযায়ী। ইসির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘প্রশাসনিক সুবিধা, আঞ্চলিক অখণ্ডতা এবং জনসংখ্যার বাস্তব বিভাজনকে যতদূর সম্ভব বিবেচনায় রেখে’ এই প্রাথমিক তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে।