১০০ বছর বাঁচার রহস্য: গবেষণায় যা জানা গেল
- Details
- by জীবনশৈলী ডেস্ক
একশ বছর বেঁচে থাকা একটি বড় অর্জন এবং এর পেছনে কিছু সাধারণ যোগসূত্র রয়েছে। সম্প্রতি শতবর্ষী ব্যক্তিদের ওপর পরিচালিত গবেষণায় দেখা গেছে, তারা সার্বিকভাবে কম রোগে ভোগেন, তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি এবং মারাত্মক অসুস্থতায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও তাদের কম।

সুইডেনের একটি গবেষণা থেকে এই তথ্য পাওয়া গেছে। ২০২৪ সালে ‘জিরোসায়েন্স’ নামক এক সাময়িকীতে প্রকাশিত ওই গবেষণায় ১৯১২ থেকে ১৯২২ সালের মধ্যে জন্ম নেওয়া ৬০ বছরের বেশি বয়সী ব্যক্তিদের তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়। গবেষকরা ১৯৭২ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত এই ব্যক্তিদের স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ করেন। এতে দেখা যায়, শতবর্ষী ব্যক্তিরা জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে বয়সজনিত রোগবালাই বিলম্বিত করতে বা এড়িয়ে চলতে সক্ষম। এই গবেষণাটি এই ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করে যে, দীর্ঘ জীবন মানেই রোগের উচ্চ হার।
একই গবেষক দলের আরেকটি গবেষণা ২০২৫ সালের আগস্টে ‘দ্য ল্যানসেট’ সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়। সেখানে দেখা যায়, শতবর্ষী ব্যক্তিরা কম রোগে আক্রান্ত হন এবং তাদের রোগাক্রান্ত হওয়ার গতিও ধীর। সব বয়সের মানুষের মধ্যেই হৃদরোগ সবচেয়ে সাধারণ হলেও, যারা ১০০ বছর বয়স পর্যন্ত বাঁচেন, তাদের ক্ষেত্রে এটি রোগের বোঝা হিসেবে কম ভূমিকা রাখে। তবে তাদের মধ্যে ক্যান্সারের মতো রোগের উপস্থিতি বেশি দেখা গেলেও স্মৃতিভ্রংশ বা উদ্বেগের মতো স্নায়বিক ও মানসিক সমস্যা তুলনামূলকভাবে কম ছিল।
দক্ষিণ ক্যারোলিনার একজন লাইসেন্সপ্রাপ্ত সমাজকর্মী ও বার্ধক্যবিদ্যা বিশেষজ্ঞ ড. মেসি পি. স্মিথ জানান, যারা হৃদরোগ বা স্ট্রোকের মতো গুরুতর অসুস্থতা এড়িয়ে চলেন, তারা যে ১০০ বছরের বেশি বাঁচবেন, তা খুবই যৌক্তিক।
তিনি জানান, শতবর্ষী ব্যক্তিরা মূলত এমন এক প্রজন্মের মানুষ, যারা খাদ্যে ক্ষতিকর রাসায়নিক সংযোজন, তেজস্ক্রিয়তা, প্রিজারভেটিভ এবং কৃত্রিম রঙের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে দূরে ছিলেন। ড. স্মিথ ফক্স নিউজ ডিজিটালকে বলেন, ‘তারা আধুনিক ওষুধের ওপর কম নির্ভরশীল ছিলেন এবং প্রাকৃতিক প্রতিকার ও জৈব খাবারের ওপর বেশি আস্থা রাখতেন।’
তার মতে, আধুনিক প্রযুক্তি ও বিশ্বব্যাপী যোগাযোগের সহজলভ্যতা, যা শতবর্ষীদের সময়ে ছিল না, বর্তমানে মানসিক চাপসহ বিভিন্ন মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ হতে পারে। তিনি বলেন, ‘তারা অন্যের বিষয়ে মাথা না ঘামিয়ে নিজেদের মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারতেন। অন্যের সমস্যায় নিজেকে জড়ালে পারিপার্শ্বিক মানসিক আঘাতের কারণে নিজের চাপ বাড়ে।’
ড. স্মিথ আরও বিশ্বাস করেন যে, পুরোনো প্রজন্ম অনেক বেশি মুক্তমনা ছিল। তিনি বলেন, ‘আজকের মতো নির্দিষ্টভাবে নিজেকে উপস্থাপন করার বা জনসমক্ষে একটি নির্দিষ্ট রূপে থাকার সীমাবদ্ধতা তাদের ছিল না।’
তিনি উল্লেখ করেন, কৈশোরে বা যৌবনে সঠিক জীবনযাত্রা বেছে নেওয়ার ওপরই নির্ভর করে বৃদ্ধ বয়সে জীবন কেমন হবে। জীবনের শুরুতে স্বাস্থ্যকর সিদ্ধান্ত নিলে ভবিষ্যতে বিভিন্ন জটিলতার ঝুঁকি কমে যায়, যা দীর্ঘায়ু লাভে সহায়তা করে।
ড. স্মিথ দীর্ঘ ও উন্নত জীবনযাপনের জন্য কম চর্বি, কম লবণযুক্ত এবং মস্তিষ্কের জন্য স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া, প্রক্রিয়াজাত খাবার বর্জন করা, মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ, পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটানো, সক্রিয় থাকা এবং পর্যাপ্ত ঘুমের পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘এই অভ্যাসগুলো জীবনকে দীর্ঘায়িত করবে এবং জীবনের মানও উন্নত করবে।’
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.
Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.