জাতিসংঘ: ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি হামলা ৩৯ শতাংশ বেড়েছে

অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বাহিনী ও অবৈধ বসতি স্থাপনকারীদের দ্বারা ফিলিস্তিনিদের ওপর সহিংসতা এবং তাদের স্থাপনা ধ্বংসের ঘটনা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। সংস্থাটি জানায়, গত বছরের তুলনায় চলতি বছর ফিলিস্তিনিদের আহত হওয়ার সংখ্যা ৩৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা সমন্বয়কারী দপ্তরের (ওসিএইচএ) তথ্য তুলে ধরে এ বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন সংস্থাটির মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক।

ডুজারিক বলেন, চলতি বছরের জানুয়ারি মাস থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি বাহিনী বা অবৈধ বসতি স্থাপনকারীদের হাতে ২,৭৮০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন। তিনি আরও বলেন, ‘আহতদের মধ্যে প্রায় ৫০০ জন ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের হামলার শিকার, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় দ্বিগুণ।’

ওসিএইচএ-র তথ্য তুলে ধরে জাতিসংঘের মুখপাত্র আরও জানান, ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের অনুমতিপত্র না থাকার অজুহাতে এ বছর পশ্চিম তীরে ১,১৫০টিরও বেশি ফিলিস্তিনি স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন, ফিলিস্তিনিদের জন্য এ ধরনের অনুমতিপত্র পাওয়া প্রায় অসম্ভব। স্থাপনা ধ্বংসের এই হার গত বছরের তুলনায় ৪৪ শতাংশ বেশি বলেও জানান তিনি।

পশ্চিম তীরের পাশাপাশি গাজার পরিস্থিতি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন ডুজারিক। তিনি বলেন, ‘গাজায় চলমান আক্রমণাত্মক অভিযান আরও তীব্র হয়েছে, যার ফলে বেসামরিক নাগরিক এবং তাদের জীবনধারণের জন্য প্রয়োজনীয় স্থাপনার ক্ষয়ক্ষতি বাড়ছে।’ তিনি জানান, সম্প্রতি ইসরায়েলি বাহিনী একটি উঁচু ভবনে হামলা চালিয়েছে। তাদের দাবি, ভবনটি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আক্রমণ পরিচালনার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছিল। তবে ওসিএইচএ-র প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, এই হামলায় কাছাকাছি থাকা বাস্তুচ্যুত মানুষের আশ্রয় নেওয়া তাঁবুগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইসরায়েলের পক্ষ থেকে শিগগিরই আরও উঁচু ভবনে হামলা চালানোর ঘোষণায় জাতিসংঘ উদ্বিগ্ন বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

বাস্তুচ্যুতির বিষয়ে ডুজারিক জানান, গত বুধ ও বৃহস্পতিবারের মধ্যে উত্তর গাজা থেকে দক্ষিণে প্রায় ৩,০০০ মানুষ সরে যেতে বাধ্য হয়েছেন। এর ফলে গত ১৪ অক্টোবর থেকে বাস্তুচ্যুত মানুষের মোট সংখ্যা প্রায় ৪১,০০০-এ পৌঁছেছে। একইসঙ্গে মানবিক সহায়তা কার্যক্রমে বাধার বিষয়ে তিনি বলেন, ওসিএইচএ দুদিনে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ২৯টি ত্রাণ অভিযানের সমন্বয়ের চেষ্টা করেছিল। কিন্তু এর মধ্যে ১৯টি অভিযানই সরাসরি প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে অথবা উল্লেখযোগ্যভাবে বিলম্বিত করা হয়েছে।