পাকিস্তানে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ, ভারতের নতুন সতর্কতায় বাড়ল উদ্বেগ

পাকিস্তানে ভয়াবহ বন্যায় উদ্ধার অভিযানে নেমে নৌকাডুবিতে অন্তত পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। দেশটির গুরুত্বপূর্ণ শহর মুলতানে এ ঘটনা ঘটে। শহরটি ইতোমধ্যে বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে এবং বাসিন্দাদের কোমর সমান পানিতে দাঁড়িয়ে জিনিসপত্র সরিয়ে নিতে দেখা গেছে। উদ্ধারকারীরা নৌকা ব্যবহার করে আটকে পড়া মানুষকে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।

চলমান এ দুর্যোগে পাঞ্জাব প্রদেশেই ১৮ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের মহাপরিচালক ইরফান আলী কাথিয়া। তিনি জানান, প্রদেশটিতে মোট ৪১ লাখ মানুষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জুন মাসের শেষ দিক থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টি ও বন্যায় দেশজুড়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯০৭ জনে এবং আহত হয়েছেন হাজার হাজার মানুষ।

এই ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যেই সাতলেজ নদীতে সম্ভাব্য প্রবল বন্যার বিষয়ে পাকিস্তানকে নতুন করে সতর্ক করেছে ভারত। রোববার ইসলামাবাদে অবস্থিত ভারতীয় হাইকমিশন পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে অবহিত করে। সতর্কবার্তায় বলা হয়, যেসব এলাকা ইতোমধ্যে প্লাবিত হয়েছে, সেগুলো আরও তলিয়ে যেতে পারে।

এর আগে সিন্ধু নদ চুক্তির আওতায় বন্যার বিষয়ে তথ্য দিত ভারত। তবে চলতি বছরের এপ্রিলে জম্মু ও কাশ্মিরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর নয়াদিল্লি ওই চুক্তি থেকে সরে আসে। এরপর থেকে কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে বন্যার সতর্কতা জানানো হচ্ছে।

ভারতের সতর্কতার পর পাকিস্তানের প্রাদেশিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষও একটি সতর্কতা জারি করেছে। এতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের আগাম প্রস্তুতি নেওয়া, লোকজনকে সরিয়ে নেওয়ার তথ্য প্রচার এবং বাঁধগুলো শক্তিশালী করার নির্দেশনা দেওয়া হয়।

সাতলেজ ও চেনাব নদীর মাঝে অবস্থিত মুলতান শহরে বন্যার পানিতে অন্তত তিনটি বাঁধ ভেঙে গেছে, যার ফলে বহু গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এর মধ্যে পিরওয়ালা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যেখানে প্রবল স্রোতে ঘরবাড়ি এবং ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এদিকে, দেশটির আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, আগামী ৮ সেপ্টেম্বর থেকে পাঞ্জাবের কয়েকটি অংশে আরও একটি বড় ধরনের মৌসুমি বৃষ্টিপাত শুরু হতে পারে, যা চলমান সংকটকে আরও গভীর করতে পারে।