বাল্টিক সাগরে রাশিয়ার ‘ছায়া নৌবহর’, ভয়াবহ বিপর্যয়ের আশঙ্কা

বাল্টিক সাগরে রাশিয়ার ক্রমবর্ধমান ‘ছায়া নৌবহর’ এক ভয়াবহ পরিবেশ বিপর্যয়ের ঝুঁকি তৈরি করেছে বলে সতর্ক করেছেন সামুদ্রিক বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, যেকোনো মুহূর্তে শত শত কোটি ডলারের তেল ছড়িয়ে পড়ে সাগরের বাস্তুতন্ত্র ধ্বংস হয়ে যেতে পারে। ফলে উপকূলীয় রাষ্ট্রগুলো এক মারাত্মক হুমকির মুখে রয়েছে।

গত রবিবার সুইডিশ সম্প্রচারমাধ্যম এসভিটি বিশ্লেষণ সংস্থা উইন্ডওয়ার্ডের তথ্য উদ্ধৃত করে জানায়, শুধু গত জুলাই মাসেই বাল্টিক সাগরে অন্তত ১৭টি তেলবোঝাই ট্যাংকার ভুয়া পতাকা ব্যবহার করে চলাচল করেছে।

উইন্ডওয়ার্ডের জ্যেষ্ঠ বিশ্লেষক মিশেল উইস বোকম্যান জানিয়েছেন, শত শত কোটি ডলারের তেল ছড়িয়ে পড়ার মতো দুর্ঘটনা ঘটা এখন কেবল সময়ের ব্যাপার। তিনি আরও বলেন, এই বিপুল পরিমাণ ক্ষতির দায়ভার সম্ভবত উপকূলীয় রাষ্ট্রগুলোর ওপরই পড়বে।

পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা পাশ কাটিয়ে তেল রপ্তানি অব্যাহত রাখতেই রাশিয়ার এই ছায়া নৌবহরের আকার বেড়েছে। বর্তমানে এই বহরে জাহাজের সংখ্যা ছয় শতাধিক বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই নৌবহরের বহু ট্যাংকার কোনো ধরনের বৈধ বীমা বা সমুদ্রে চলাচলের সনদ ছাড়াই চলাচল করছে, যা গুরুতর নিরাপত্তা লঙ্ঘন।

উইন্ডওয়ার্ড জানায়, নিষেধাজ্ঞা বা দুর্বল ব্যবস্থাপনার কারণে নিবন্ধন হারানো অনেক জাহাজকে নামসর্বস্ব কোম্পানির মাধ্যমে জালিয়াতি করে পুনরায় নিবন্ধন দেওয়া হয়েছে। বোকম্যান বলেন, ‘আমরা রাশিয়ায় পরিচালিত জাহাজ কোম্পানিগুলোর ব্যবহৃত এগারোটি জালিয়াতিপূর্ণ নিবন্ধন দপ্তর খুঁজে পেয়েছি। এগুলো নিছকই মূল্যহীন কাগজ’।

আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী এ ধরনের জাহাজের চলাচল সরাসরি বন্ধ করা না গেলেও, উপকূলীয় রাষ্ট্রগুলো ঝুঁকি বিবেচনায় হস্তক্ষেপ করতে পারে। বোকম্যান জানান, ইউরোপীয় সরকারগুলো তাদের সাধ্যমতো ব্যবস্থা নিলেও এই সমস্যা ‘এক রাতের মধ্যে সমাধান করা সম্ভব নয়’।