আস্থা ভোটে হেরে গেলেন ফরাসি প্রধানমন্ত্রী, ছয় দশকে প্রথম

ফ্রান্সের পার্লামেন্টে আস্থা ভোটে হেরে গেছেন প্রধানমন্ত্রী ফ্রাঁসোয়া বায়রু। এর মধ্য দিয়ে তিনি দেশটির ১৯৫৮ সালের পর থেকে প্রথম প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আস্থা ভোটে ক্ষমতাচ্যুত হলেন। সোমবার ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির প্রেসিডেন্ট ইয়েল ব্রাউন-পিভে এই ফলাফল ঘোষণা করেন।

ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে অনুষ্ঠিত এই ভোটাভুটিতে বায়রু সরকারের পক্ষে ১৯৪টি এবং বিপক্ষে ৩৬৪টি ভোট পড়ে। পার্লামেন্টের মোট ৫৮৯ জন সদস্যের মধ্যে ১৫ জন ভোটদানে বিরত ছিলেন। দেশটির সম্প্রচারমাধ্যম বিএফএম টিভি জানিয়েছে, মঙ্গলবার প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর কাছে বায়রু তার সরকারের পদত্যাগপত্র জমা দেবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

প্রেসিডেন্টের দপ্তর থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ম্যাক্রোঁ বিষয়টি আমলে নিয়েছেন এবং ‘আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই’ নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করবেন।

বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী বায়রু সম্প্রতি ২০২৬ সালের বাজেট কাঠামো পেশ করেছিলেন। তিনি ফ্রান্সের ক্রমবর্ধমান সরকারি ঋণ কমাতে প্রায় ৪৪ বিলিয়ন ইউরো সাশ্রয়ের একটি পরিকল্পনার জন্য আইনপ্রণেতাদের সমর্থন চেয়েছিলেন। বর্তমানে দেশটির সরকারি ঋণ মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের (জিডিপি) ১১৩ শতাংশ এবং বাজেট ঘাটতি ৫.৮ শতাংশ, যা ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম সর্বোচ্চ।

ভোটের আগে বায়রু সতর্ক করে বলেছিলেন, দেশটি ‘অতিরিক্ত ঋণের দ্বারপ্রান্তে’ রয়েছে। তিনি আইনপ্রণেতাদের ‘বিশৃঙ্খলার চেয়ে দায়িত্বশীলতাকে’ বেছে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন। তবে কট্টর বামপন্থী দল এলএফআই থেকে শুরু করে কট্টর ডানপন্থী ন্যাশনাল র‍্যালি (আরএন) এবং সমাজতন্ত্রীরা একজোট হয়ে সরকারের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।

উল্লেখ্য, ফ্রান্সে বাজেট নিয়ে রাজনৈতিক অস্থিরতা নতুন নয়। গত বছরের ডিসেম্বরেও বামপন্থী ও কট্টর ডানপন্থী দলগুলোর অনাস্থা প্রস্তাবের কারণে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মিশেল বার্নিয়ের সরকারের পতন ঘটেছিল।