ডাকসু নির্বাচন: ভোটগ্রহণ শেষ, ফলাফলের অপেক্ষা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টা থেকে শুরু হওয়া ভোটগ্রহণ শেষ হয় বিকেল ৪টায়। এখন চলছে ভোটগণনা, শিক্ষার্থীরা অপেক্ষা করছেন নির্বাচনের ফলাফলের জন্য। ধারণা করা হচ্ছে, রাত ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে ফলাফল প্রকাশ করা হতে পারে।

সকাল থেকে ৮টি কেন্দ্রজুড়ে উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। বিকেল ৪টার পর আর নতুন ভোটারকে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়নি, তবে যারা লাইনে ছিলেন, তারা ভোট দিতে পেরেছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান দুপুরে বিভিন্ন কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে বলেন, বিভিন্ন কেন্দ্রে ইতিমধ্যে ৭০ শতাংশের বেশি ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। ভোট শান্তিপূর্ণভাবে চলছে।

তিনি কার্জন হলে ঘটে যাওয়া দ্বৈত ব্যালট বিতরণের ঘটনায় তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানান। ভোটগ্রহণকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন প্রার্থীরা প্রশাসনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্ব ও অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন।

ছাত্রদল সমর্থিত ভিপি প্রার্থী আবিদুল ইসলাম অভিযোগ করেন, গণতন্ত্র ও বাকস্বাধীনতাকে হরণ করার অপচেষ্টা চলছে।

শিবির সমর্থিত প্যানেলের জিএস প্রার্থী এস এম ফরহাদ বলেন, নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ আচরণ করছে না।

ইসলামী ছাত্র আন্দোলন সমর্থিত প্যানেলের জিএস প্রার্থী খায়রুল হাসান অভিযোগ করেন, তাঁদের পোলিং এজেন্টকে কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে।

স্বতন্ত্র ভিপি প্রার্থী উমামা ফাতেমা স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের আহ্বান জানান।

বৈষম্যবিরোধী প্যানেলের জিএস প্রার্থী আবু বাকের মজুমদার বলেন, ভোট গ্রহণ আনন্দমুখর পরিবেশে শুরু হয়েছে।

একটি আলোচিত ঘটনায় স্বতন্ত্র প্রার্থী রুপাইয়া শ্রেষ্ঠা তঞ্চঙ্গ্যা অভিযোগ করেন, টিএসসির এক কেন্দ্রে আগে থেকেই দাগ দেওয়া ব্যালট পেপার দেওয়া হয়েছিল। তবে সংশ্লিষ্ট পোলিং কর্মকর্তা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

ভোট কাভারেজ চলাকালে সাংবাদিক তরিকুল ইসলাম হঠাৎ অচেতন হয়ে পড়েন এবং পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। সাংবাদিক মহলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

ভোটকেন্দ্রগুলোতে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। ক্যাম্পাসের প্রবেশপথে চেকপোস্ট বসানো হয় এবং পুলিশ, বিজিবি সদস্যরা নিরাপত্তা রক্ষায় দায়িত্ব পালন করেন। টিএসসি এলাকায় পুলিশের একটি নিয়ন্ত্রণকক্ষও স্থাপন করা হয়।

এবার ডাকসুতে মোট ভোটার ৩৯,৮৭৪ জন। এর মধ্যে ছাত্রী ভোটার ১৮,৯৫৯ জন, আর ছাত্র ভোটার ২০,৯১৫ জন।
ডাকসুর ২৮টি পদের বিপরীতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৪৭১ জন প্রার্থী। এর মধ্যে নারী প্রার্থী ৬২ জন। ১৮টি হলে মোট ২৩৪টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১,০৩৫ জন প্রার্থী।