গাজায় বিপর্যয় ঘনীভূত, দৃঢ় পদক্ষেপ চায় জাতিসংঘ

ইসরায়েলি সামরিক অভিযান তীব্রতর হওয়ায় গাজা উপত্যকায় পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে বলে সতর্ক করেছে জাতিসংঘ। সংস্থাটি চলমান মানবিক বিপর্যয় রোধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবিলম্বে দৃঢ় পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।

জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক বলেন, ‘আপনারা সবাই গাজার খবর রাখছেন। এটা স্পষ্ট যে, গাজা উপত্যকা আরও গভীর বিপর্যয়ের দিকে চলে যেতে পারে বলে আমরা যে সতর্কতা দিয়েছিলাম, তা এখন বাস্তবে রূপ নিচ্ছে। কারণ, সেখানে সামরিক অভিযান আরও তীব্র হয়েছে।’ তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এখনো পারে এবং তাদের অবশ্যই আরও দুর্ভোগ ঠেকাতে দৃঢ়ভাবে কাজ করতে হবে।’

ডুজারিক জানান, গত ৪৮ ঘণ্টায় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বহুতল ভবনগুলোতে হামলা চালিয়েছে, যার ফলে আরও অনেক পরিবার তাদের ঘরবাড়ি বা তাঁবু হারিয়েছে। এছাড়া, ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ মঙ্গলবার গাজা শহরের প্রত্যেককে দক্ষিণে চলে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। তিনি যোগ করেন, ‘গাজা গভর্নরেটে দুর্ভিক্ষ নিশ্চিত হওয়ার মাত্র দুই সপ্তাহের মাথায় এসব ঘটনা ঘটছে।’

মানবিক সমন্বয় বিষয়ক জাতিসংঘের কার্যালয়ের (ওসিএইচএ) তথ্য উদ্ধৃত করে ডুজারিক বলেন, ‘উত্তরাঞ্চল ছেড়ে যাওয়া অনেকের জন্যই কার্যত অসম্ভব।’ তিনি জানান, উত্তরাঞ্চল ছাড়তে পরিবহনের জন্য ১,০০০ মার্কিন ডলার পর্যন্ত খরচ হতে পারে। কিন্তু যে সড়কগুলো ব্যবহার করতে হবে, সেগুলো চলাচলের প্রায় অযোগ্য এবং দক্ষিণের আশ্রয়শিবিরগুলো ধারণক্ষমতার বাইরে চলে গেছে, সেখানে তিল ধারণের ঠাঁই নেই।

তিনি আরও বলেন, ‘গত দুইদিনে আমাদের সহকর্মীরা উত্তর গাজা থেকে দক্ষিণে ৯,৪০০ জনের চলে যাওয়ার তথ্য নথিভুক্ত করেছেন। স্থানীয় সময় দুপুর ২টা পর্যন্ত মধ্য আগস্ট থেকে এই সংখ্যা প্রায় ৬২,০০০-এ পৌঁছেছে।’ ডুজারিক উল্লেখ করেন, মধ্য আগস্ট থেকে পুরো গাজা উপত্যকায় বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা ১ লাখ ১০ হাজার ছাড়িয়েছে, যাদের অনেকেই উত্তরাঞ্চলের মধ্যেই স্থান পরিবর্তন করেছেন।