নেপালে সহিংস বিক্ষোভে নিহত ৩৪, আহত ১ হাজার ৩৬৮

নেপালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নিষিদ্ধের জেরে শুরু হওয়া সহিংস বিক্ষোভে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩৪ জনে দাঁড়িয়েছে। ব্যাপক সরকারবিরোধী আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি এবং দেশটির নিরাপত্তার দায়িত্ব নিয়েছে সেনাবাহিনী। বৃহস্পতিবার দেশটির স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা মন্ত্রণালয় এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।

স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ডা. প্রকাশ বুধাথোকি জানিয়েছেন, বিক্ষোভে ১ হাজার ৩৬৮ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে ৯৪৯ জন ইতোমধ্যে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নিষিদ্ধ করার সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সোমবার থেকে এই বিক্ষোভের সূত্রপাত হয়। ‘জেনারেশন জেড’ বা তরুণ প্রজন্মের নেতৃত্বে শুরু হওয়া এই আন্দোলন স্বল্প সময়ের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলির সরকারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে বৃহত্তর রূপ নেয় এবং দেশজুড়ে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে পরিণত হয়।

আন্দোলন তীব্র আকার ধারণ করলে সেনাপ্রধানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে পদত্যাগ করেন প্রধানমন্ত্রী অলি। এরপর সেনাবাহিনী হেলিকপ্টারে করে মন্ত্রিসভার সদস্যদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়। বর্তমানে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের জন্য আলোচনা চলছে।

বিক্ষোভকারী তরুণরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কিকে চাইছেন বলে জানা গেছে। তবে এ বিষয়ে এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।

দেশজুড়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে কারফিউ জারির পাশাপাশি সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার ভোরে বাগমাতি প্রদেশের রামেছাপ জেলায় একটি কারাগার ভাঙার চেষ্টা হলে সেনাবাহিনীর গুলিতে অন্তত দুজন নিহত হয়। পুলিশ জানিয়েছে, বন্দীরা কারাগারের মূল ফটক ভাঙার চেষ্টা করলে নিরাপত্তা বাহিনী গুলি চালায়। তবে কোনো বন্দী পালাতে পারেনি এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

এদিকে নেপাল পুলিশের কেন্দ্রীয় মুখপাত্র বিনোদ ঘিমির জানিয়েছেন, দেশব্যাপী বিক্ষোভ চলাকালে বিভিন্ন কারাগার থেকে মোট ১৪ হাজার ৩০৭ জন বন্দী পালিয়ে গেছে।

উল্লেখ্য, ৭৩ বছর বয়সী বামপন্থী নেতা কেপি শর্মা অলি গত বছর নেপালি কংগ্রেসের সঙ্গে জোট সরকার গঠন করে চতুর্থ মেয়াদে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন।