নেতানিয়াহু সরকারের সঙ্গে মোসাদের মতবিরোধ প্রকাশ্যে!

ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ কাতারের রাজধানী দোহায় হামাস নেতাদের হত্যার একটি গোপন পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করেছিল। এই উদ্যোগের ফলে জিম্মি মুক্তি আলোচনা ব্যাহত হতে পারে—এমন আশঙ্কায় তারা এই সিদ্ধান্ত নেয়। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনে এই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে।

এ বিষয়ে অবগত দুই ইসরায়েলি কর্মকর্তা ওয়াশিংটন পোস্টকে জানিয়েছেন, মোসাদের আপত্তির কারণেই বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকার দোহায় বিমান হামলা চালাতে বাধ্য হয়। তবে গত ৯ সেপ্টেম্বরের সেই হামলায় হামাসের শীর্ষ নেতাদের হত্যা করতে ব্যর্থ হয় ইসরায়েল।

প্রতিবেদনে বলা হয়, মোসাদের পরিচালক ডেভিড বার্নিয়া কাতারে হামাস নেতাদের ওপর হামলার বিরোধিতা করেন। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে, এতে কাতারের সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে, যা জিম্মি মুক্তি চুক্তি নিয়ে চলমান আলোচনাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।

কর্মকর্তারা ওয়াশিংটন পোস্টকে বলেন, ‘জিম্মিদের ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য একটি চুক্তি টেবিলে রয়েছে এবং আলোচনা শেষ হওয়া উচিত। জিম্মিদের জন্য পরিণতি কী হতে পারে, তা সকলেই বুঝতে পেরেছিলেন এবং এমন একটি অভিযান সেই সম্ভাবনাকে নষ্ট করে দিত।’

এদিকে, ইসরায়েলি সম্প্রচারমাধ্যম চ্যানেল ১২ জানিয়েছে, সেনাপ্রধান ইয়াল জামির, মোসাদ প্রধান ডেভিড বার্নিয়া এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জাচি হানেগবি এই পরিকল্পনার বিপক্ষে ছিলেন। তবে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু, প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ, অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা শিন বেতের ভারপ্রাপ্ত প্রধান ‘মেম’ এবং কৌশলগত বিষয়ক মন্ত্রী রন ডার্মার এই অভিযানের পক্ষে মত দেন।

পরবর্তীতে স্থল অভিযানের পরিবর্তে ইসরায়েল ১৫টি যুদ্ধবিমান থেকে দোহায় ১০টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে। এই হামলায় একজন কাতারি নিরাপত্তা কর্মকর্তাসহ ছয়জন নিহত হন। নিহতদের মধ্যে হামাসের কোনো শীর্ষ নেতা না থাকলেও গোষ্ঠীটির কাতারভিত্তিক নেতা খলিল আল-হাইয়ারের ছেলে হাম্মাম নিহত হন।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনী হামলা চালিয়ে আসছে। প্রায় দুই বছর ধরে চলা এই সংঘাতে ৬৪ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের একটি বড় অংশই নারী ও শিশু।