কৃষিজমিতে রহস্যময় ডেটা সেন্টার, স্থানীয়দের বিক্ষোভে তোলপাড়

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই প্রযুক্তি একদিকে যেমন শত শত কোটি ডলারের নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিচ্ছে, তেমনি এর বিস্তারকে কেন্দ্র করে সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বেগ ও ক্ষোভ বাড়ছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন যেখানে এই খাতে আমেরিকার আধিপত্য ধরে রাখতে তৎপর, সেখানে বড় বড় প্রযুক্তি প্রকল্পের বিরুদ্ধে সরব হচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

সম্প্রতি উইসকনসিনের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য পরিচিত একটি শহরের বাসিন্দারা কৃষিজমিতে ১৬০ কোটি ডলার ব্যয়ে একটি ডেটা সেন্টার নির্মাণের প্রস্তাবের বিরুদ্ধে তীব্র উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। একইভাবে, নর্থ ক্যারোলাইনার টারবোরো শহরের অধিবাসীরাও তাদের শহর পরিষদে প্রায় ৫০ একর জমির ওপর ৩০০ মেগাওয়াটের একটি শক্তি সঞ্চয় কেন্দ্র স্থাপনের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করার আহ্বান জানিয়েছেন। এই প্রকল্পে ৫০০ মানুষের কর্মসংস্থান এবং শহরে বিপুল পরিমাণ কর রাজস্ব আসার সম্ভাবনা থাকলেও পরিবেশ ও নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত তারা।

প্রযুক্তি খাতে এই উত্তেজনার আবহে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সংস্থা ওপেনএআই ঘোষণা করেছে, তাদের অলাভজনক মূল সংস্থা ১০ হাজার কোটি ডলারেরও বেশি মূল্যের অংশীদারিত্ব অর্জন করেছে, যদিও প্রতিষ্ঠানটির নিয়ন্ত্রণ আগের মতোই তাদের হাতেই থাকবে। অন্যদিকে, ওরাকলের শেয়ারের দাম বিপুল পরিমাণে বেড়ে যাওয়ায় এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা ল্যারি এলিসন বিশ্বের শীর্ষ ধনীর তালিকায় টেসলার প্রধান নির্বাহী এলন মাস্ককে ছাড়িয়ে গেছেন।

বিশ্বের অর্ধপরিবাহী এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা শিল্পের একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব ট্রাম্প প্রশাসনের নীতির প্রশংসা করেছেন। তিনি আমেরিকার প্রতিপক্ষদের চেয়ে এগিয়ে থাকার জন্য ট্রাম্পের পরিকল্পনাকে ‘অত্যন্ত সক্রিয়’ বলে অভিহিত করেন। তবে ‘বৈশ্বিক এআই আধিপত্য’ প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে মার্কিন প্রেসিডেন্টের এই উদ্যোগ ‘কার্যকর পরার্থবাদ’ নামে পরিচিত একটি গোষ্ঠীর বাধার মুখে পড়তে পারে, যারা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ভবিষ্যৎ নিয়ে সন্দিহান।

প্রযুক্তি এখন সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনেও প্রবেশ করেছে। জুম ও গুগল মিটের মতো মাধ্যমে এখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে সভার আলোচনা লিপিবদ্ধ করে তার সারসংক্ষেপ তৈরি করে দেয়। এটি সহকারী হিসেবে সুবিধাজনক হলেও ব্যক্তিগত গোপনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। অন্যদিকে, আবর্জনা ব্যবস্থাপনায় মার্কিন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ওশকোশ কর্পোরেশন নিয়ে এসেছে স্বয়ংক্রিয় রোবট ‘হ্যারি’। এছাড়া, সরবরাহ খাতেও চালকবিহীন ট্রাকের ব্যবহার বাড়ছে, যা এই শিল্পের আমূল পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে।