ওয়াশিংটনকে জাতীয় জরুরি অবস্থা জারির হুমকি দিলেন ট্রাম্প

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ওয়াশিংটন ডিসির পুলিশকে কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার এবং জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণার হুমকি দিয়েছেন। শহরের পুলিশ যদি কেন্দ্রীয় অভিবাসন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সহযোগিতা বন্ধ করে দেয়, তাহলে এই কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে তিনি জানান। সোমবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি এই হুঁশিয়ারি দেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প দাবি করেন, ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের পর কেন্দ্রীয় সরকার মাত্র কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ওয়াশিংটনকে ‘সবচেয়ে বিপজ্জনক ও খুনে জর্জরিত শহরগুলোর একটি’ থেকে ‘অন্যতম নিরাপদ’ শহরে পরিণত করেছে। তিনি আরও বলেন, বর্তমানে ওয়াশিংটনের রেস্তোরাঁ, দোকান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো গ্রাহকে পরিপূর্ণ এবং শহরে ‘কার্যত কোনো অপরাধ নেই’।

তবে একাধিক গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিতর্কিত এই ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের কারণে শহরের রেস্তোরাঁ ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সরকারি পরিসংখ্যানেও দেখা যায়, ট্রাম্পের পদক্ষেপের আগে রাজধানীতে অপরাধের হার কম ছিল। কিন্তু মার্কিন প্রেসিডেন্ট এই পরিসংখ্যানকে ‘ভুয়া’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।

ট্রাম্প শহরের ডেমোক্র্যাট মেয়র মুরিয়েল বাউসারের তীব্র সমালোচনা করেছেন। মেয়র বাউসার সম্প্রতি কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছিলেন যে, মেট্রোপলিটন পুলিশ বিভাগ আর অভিবাসন ও শুল্ক প্রয়োগকারী সংস্থার (আইসিই) সঙ্গে সহযোগিতা করবে না। এ প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলেন, মেয়র বাউসার ‘বছরের পর বছর ধরে রাজধানীর এই সহিংস অপরাধমূলক দখলদারিত্বে নেতৃত্ব দিয়েছেন’।

এর আগে মেয়র বাউসার আশা প্রকাশ করেছিলেন যে, শহরের মেট্রোপলিটন পুলিশের ওপর ট্রাম্পের ৩০ দিনের জরুরি নিয়ন্ত্রণ শেষ হওয়ার পর বিভাগটি ‘জরুরি অবস্থার পূর্ববর্তী স্বাভাবিক অবস্থায়’ ফিরে আসবে।

এর জবাবে ট্রাম্প দাবি করেন, ‘আমি যদি এমনটি হতে দিই, তাহলে অপরাধ আবার ভয়ংকর রূপে ফিরে আসবে’। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে আরও বলেন, ‘আমি এটি হতে দেব না। প্রয়োজনে আমি জাতীয় জরুরি অবস্থা ডাকব এবং পুলিশকে কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণে নেব’।

উল্লেখ্য, গত আগস্ট মাসে ট্রাম্প ওয়াশিংটনে ‘অপরাধজনিত জরুরি অবস্থা’ ঘোষণা করে মেট্রোপলিটন পুলিশ বিভাগকে কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণে নেন এবং রাস্তায় টহল দেওয়ার জন্য ন্যাশনাল গার্ডের সদস্যদের মোতায়েন করেন।

ট্রাম্প প্রশাসন দাবি করেছে, কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপের সময় অপরাধ উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। তবে সমালোচকদের মতে, এই সাফল্য ছিল লোকদেখানো এবং এই পদক্ষেপের মূল উদ্দেশ্য ছিল কৃষ্ণাঙ্গ ও ডেমোক্র্যাট মেয়রদের অযোগ্য হিসেবে উপস্থাপন করা।