সুওয়াইদা সংকট নিরসনে নতুন রূপরেখা, আরব বিশ্বের প্রশংসা

সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর সুওয়াইদার সংকট নিরসনে সিরিয়া, জর্ডান ও যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ উদ্যোগে গৃহীত একটি রূপরেখাকে স্বাগত জানিয়েছে আরব দেশগুলো। মঙ্গলবার সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদ আল-শাইবানি সাত ধাপের এই পরিকল্পনাটি ঘোষণা করেন। এই উদ্যোগকে সিরিয়ার স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখছে সৌদি আরব, কুয়েত ও কাতার।

সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘোষিত এই রূপরেখাকে স্বাগত জানিয়ে বলেছে, সিরিয়ার নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা অর্জন এবং এর সম্পদ ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষার জন্য নেওয়া সব পদক্ষেপে তাদের সমর্থন রয়েছে, যা সিরিয়ার জনগণের একটি স্থিতিশীল ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করবে। এক্ষেত্রে জর্ডান ও যুক্তরাষ্ট্রের নেওয়া উদ্যোগেরও প্রশংসা করেছে সৌদি আরব।

এক বিবৃতিতে কুয়েতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও সুওয়াইদার সংকট সমাধান এবং দক্ষিণ সিরিয়ায় স্থিতিশীলতা আনার এই রূপরেখা গ্রহণের প্রশংসা করেছে। বিবৃতিতে সিরিয়ায় নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠা এবং এর সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষায় সব ধরনের আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টার প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করা হয়।

অন্যদিকে, কাতার এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে একে ‘একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ’ হিসেবে অভিহিত করেছে, যা ‘নতুন সিরিয়ার ভবিষ্যৎ নির্মাণ এবং এই অঞ্চলে নিরাপত্তা ও শান্তি জোরদার করার সম্মিলিত ইচ্ছার প্রতিফলন’। দেশটি সিরিয়ার সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা, ঐক্য ও আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রতি নিজেদের সমর্থনের কথাও জানিয়েছে।

মঙ্গলবার দামেস্কে জর্ডানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আয়মান সাফাদি এবং সিরিয়ায় নিযুক্ত মার্কিন দূত টম ব্যারাকের সঙ্গে আলোচনার পর সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদ আল-শাইবানি সুওয়াইদা সংকট নিরসনে সাত ধাপের এই রূপরেখা ঘোষণা করেন। এই পরিকল্পনার আওতায় সুওয়াইদায় নিরবচ্ছিন্ন মানবিক ও চিকিৎসা সহায়তা প্রদান, জরুরি পরিষেবা পুনরুদ্ধার এবং রাস্তাঘাট সুরক্ষিত ও চলাচল সহজ করার জন্য স্থানীয় নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করার কথা বলা হয়েছে। এছাড়া, বেসামরিক নাগরিক ও তাদের সম্পত্তির ওপর সহিংসতায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ এবং জাতীয় সম্প্রীতি অর্জনে সমাজের সকল গোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্বকারী একটি স্থানীয় কাউন্সিল গঠনের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, এই আলোচনাটি গত জুলাই ও আগস্ট মাসে আম্মানে অনুষ্ঠিত বৈঠকের ওপর ভিত্তি করে আয়োজন করা হয়, যেখানে সুওয়াইদায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর এবং সংঘাতের একটি সমাধান খোঁজার ওপর জোর দেওয়া হয়েছিল। দ্রুজ গোষ্ঠী ও বেদুইন উপজাতিদের মধ্যে সপ্তাহব্যাপী সশস্ত্র সংঘর্ষ এবং ইসরায়েলি সামরিক হামলার পর গত ১৯ জুলাই থেকে সুওয়াইদায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর রয়েছে।