ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে ইইউর নতুন কৌশল

ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক আরও গভীর করতে একটি নতুন কৌশলগত কর্মসূচি উন্মোচন করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। বাণিজ্য, নিরাপত্তা, প্রযুক্তি ও বৈশ্বিক সহযোগিতাকে প্রাধান্য দিয়ে বুধবার ব্রাসেলসে এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লেন এক বিবৃতিতে জানান, এখন নির্ভরযোগ্য অংশীদারদের দিকে মনোযোগ দেওয়ার এবং অভিন্ন স্বার্থ ও মূল্যবোধের ওপর ভিত্তি করে অংশীদারত্ব আরও জোরদার করার সময় এসেছে। তিনি বলেন, ইউরোপ ইতোমধ্যে ভারতের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার এবং বছরের শেষ নাগাদ মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি চূড়ান্ত করতে তারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ফন ডার লেন যোগ করেন, ইউরোপ ব্যবসার জন্য উন্মুক্ত এবং ভারতের সঙ্গে একটি যৌথ ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে বিনিয়োগ করতে প্রস্তুত।

এই কৌশলে পাঁচটি অগ্রাধিকার ক্ষেত্র নির্ধারণ করা হয়েছে: বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন, নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা, আঞ্চলিক সংযোগ এবং বৈশ্বয়িক বিষয়াবলি। এতে মুক্ত বাণিজ্য আলোচনা সম্পন্ন করা, সরবরাহ ব্যবস্থা শক্তিশালীকরণ, পরিচ্ছন্ন জ্বালানি প্রকল্পের অগ্রগতি এবং স্বাস্থ্য, খাদ্য নিরাপত্তা ও উদ্ভাবনে সহযোগিতা বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।

নিরাপত্তা খাতে, ইইউ-ভারত নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা অংশীদারত্বের ওপর আলোকপাত করা হয়েছে। এর আওতায় সংকট ব্যবস্থাপনা, সামুদ্রিক নিরাপত্তা, সাইবার প্রতিরক্ষা, সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা এবং প্রতিরক্ষা শিল্পে সহযোগিতার মতো বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত। এছাড়া, গোপনীয় তথ্য বিনিময়ের সুবিধার্থে একটি ‘তথ্যের নিরাপত্তা সংক্রান্ত চুক্তি’ নিয়ে আলোচনার পরিকল্পনাও করছে ব্রাসেলস।

এই পরিকল্পনায় আঞ্চলিক সংযোগ প্রচেষ্টার ওপরও জোর দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে ভারত-মধ্যপ্রাচ্য-ইউরোপ অর্থনৈতিক করিডোর, অন্যান্য অংশীদারদের সঙ্গে ত্রিপাক্ষিক সহযোগিতা এবং বহুপাক্ষিক ফোরামে যৌথ অংশগ্রহণ। এর পাশাপাশি যুব কর্মসূচি, দক্ষতার গতিশীলতা এবং প্রস্তাবিত ইইউ-ভারত বাণিজ্য ফোরামের মাধ্যমে ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়িক সম্পর্ক স্থাপনের কথাও বলা হয়েছে।

ইইউ কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট আন্তোনিও কস্তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে এই কর্মসূচিকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি ভারতকে একটি ‘গুরুত্বপূর্ণ বৈশ্বিক শক্তি’ এবং ‘ইউরোপীয় ইউনিয়নের জন্য একটি স্বাভাবিক কৌশলগত অংশীদার’ হিসেবে অভিহিত করেন। তিনি আরও লেখেন, ২০২৬ সালের শুরুতে অনুষ্ঠেয় পরবর্তী ইইউ-ভারত শীর্ষ সম্মেলনের দিকে তিনি তাকিয়ে আছেন, যেখানে এই শক্তিশালী অংশীদারত্ব নিশ্চিত করা হবে বলে তিনি আশাবাদী। এই লক্ষ্যে তিনি প্রেসিডেন্ট ফন ডার লেন ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে কাজ করতে চান।