ইউক্রেন সংকট: যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়া নতুন আলোচনার প্রত্যাশা করছেন লাভরভ

ইউক্রেন সংকট নিরসনে মস্কো ও ওয়াশিংটনের মধ্যে নতুন আলোচনার প্রত্যাশা করছেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ। বৃহস্পতিবার রাশিয়ার একটি টেলিভিশন চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এই আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

লাভরভ জানান, গত ১৫ আগস্ট আলাস্কার অ্যাঙ্কোরেজে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে ইউরোপীয় মিত্রদের সঙ্গে নিজের অবস্থান সমন্বয়ের জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট সময় নিয়েছেন বলে তিনি উল্লেখ করেন।

সাক্ষাৎকারে লাভরভ বলেন, ‘আমি মনে করি আমাদের মধ্যে আরও আলোচনা হবে। অ্যাঙ্কোরেজে আমরা সংকটের মূল কারণ ও আমাদের অবস্থান সম্পর্কে ট্রাম্পের ব্যাখ্যা গ্রহণ করেছি। তিনি এই যুক্তি খণ্ডন করেননি। ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি তার মিত্রদের সঙ্গে আলোচনা করবেন।’

তিনি আরও যোগ করেন, ইউরোপীয় দেশগুলো প্রকাশ্যে ইউক্রেন সংকটের প্রেক্ষাপটে রাশিয়ার বিষয়ে কোনো গঠনমূলক পদক্ষেপ নেওয়া থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বিরত রাখার চেষ্টা করছে, কিন্তু এখন পর্যন্ত তারা ব্যর্থ হয়েছে।

রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মতে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের ভেতরেই শক্তিশালী বিরোধিতার সম্মুখীন হচ্ছেন। তিনি দাবি করেন, ট্রাম্প তার প্রথম মেয়াদে রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের ইচ্ছা দেখালেও সে সময়কার ‘প্রশাসনের ভেতরের প্রভাবশালী গোষ্ঠী’ তা করতে দেয়নি। লাভরভ বলেন, নতুন মেয়াদের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার সময় ট্রাম্প ‘সমমনা ব্যক্তিদের নিয়ে একটি শক্তিশালী ও প্রভাবশালী দল’ গঠন করেছেন।

তবে তিনি যোগ করেন, অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্টের মতো কিছু ব্যক্তি ‘প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেওয়া সীমা এবং তার ক্ষমতার পরিধি অতিক্রম করছেন।’

লাভরভের ভাষ্যমতে, ট্রাম্প বুঝতে পেরেছেন যে রাশিয়া ইউক্রেনের ভূখণ্ড দখলে আগ্রহী নয়, বরং সেখানকার রুশ জনগোষ্ঠীর অধিকার নিশ্চিত করতে চায়। তিনি বলেন, ‘আলাস্কার বৈঠকে আমরা উল্লেখ করেছি যে, ইউক্রেনে ক্যানোনিকাল ইউক্রেনীয় অর্থোডক্স চার্চ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ কথা শুনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিস্মিত হন এবং মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওকে কয়েকবার জিজ্ঞেস করেন এটি সত্যি কি না।’

লাভরভ আরও বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার পূর্বসূরি জো বাইডেন ও তার দলের ‘কৃত্রিমভাবে তৈরি করা’ যুদ্ধকে আলোচনার বাইরে রাখতে চেষ্টা করছেন।

ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংঘাত প্রসঙ্গে লাভরভ এটিকে ‘একটি ভিন্ন বিষয়’ বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘এটি একটি বিয়োগান্তক ঘটনা, একটি মানবিক বিপর্যয়। যুদ্ধের চেয়ে শান্তিই যে উত্তম, এই ধারণার সঙ্গে কে দ্বিমত পোষণ করবে?’