ইসরায়েলকে সহায়তার অভিযোগে জার্মান চ্যান্সেলর ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা

গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলকে গণহত্যায় সহায়তার অভিযোগে জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্ৎসসহ তার সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী ও অস্ত্র ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। শুক্রবার একদল আইনজীবী জার্মানির ফেডারেল প্রসিকিউটরের দপ্তরে এই অভিযোগ দায়ের করেন।

বার্লিনে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে ইউরোপিয়ান লিগ্যাল সাপোর্ট সেন্টারের (ইএলএসসি) আইনজীবী নাদিজা সামুর জানান, তাদের অভিযোগে বর্তমান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্ৎস, পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোহান ওয়াদেফুল ছাড়াও সাবেক চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস এবং সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আনালেনা বেয়ারবকের নামও সহযোগী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। একইসঙ্গে, জার্মানির কয়েকটি শীর্ষ অস্ত্র কোম্পানির ব্যবস্থাপকদের বিরুদ্ধেও গাজায় মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যায় মদদ দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘প্রায় দুই বছর ধরে ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে গণহত্যা সরাসরি সম্প্রচারিত হচ্ছে। এখন ন্যায়বিচার ও জবাবদিহিতার সময়। বর্তমান এবং পূর্ববর্তী সরকারি কর্মকর্তারা এই গণহত্যায় জড়িত। মূলত গাজায় ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে ব্যবহৃত অস্ত্র রপ্তানির অনুমোদনের মাধ্যমে তারা এই গণহত্যায় জড়িত রয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘জার্মান সরকারের কর্মকর্তারা প্রকাশ্যে এবং বারবার ইসরায়েলের প্রতি তাদের নিঃশর্ত এবং সীমাহীন সমর্থনের কথা গর্ব করে বলেছেন। গণহত্যার প্রতি এ ধরনের সমর্থনের পরিণতির পরিপ্রেক্ষিতে আমরা তাদের জবাবদিহি করতে চাই।’

এই ফৌজদারি মামলায় বিশেষভাবে সাতজন বর্তমান ও সাবেক সরকারি কর্মকর্তাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, যাদের মধ্যে বর্তমান প্রতিরক্ষামন্ত্রী বরিস পিস্টোরিয়াসও রয়েছেন। জার্মানির ফেডারেল নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য হিসেবে পিস্টোরিয়াস গাজায় যুদ্ধাপরাধের বিষয়ে আন্তর্জাতিক সতর্কতা সত্ত্বেও ইসরায়েলে অস্ত্র রপ্তানি অনুমোদন করেছিলেন।

উল্লেখ্য, ওলাফ শলৎসের নেতৃত্বে পূর্ববর্তী জার্মান জোট সরকার ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৫ সালের মে মাসের মধ্যে ইসরায়েলে প্রায় ৪৮৫ মিলিয়ন ইউরো মূল্যের অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহের অনুমোদন দিয়েছিল। গত মে মাসে ফ্রিডরিখ মের্ৎসের নেতৃত্বে নতুন জোট সরকার গঠিত হওয়ার পরও ইসরায়েলের প্রতি একই নীতি অব্যাহত রয়েছে। সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে ১০ জুন পর্যন্ত বর্তমান সরকার ইসরায়েলে প্রায় ৪ মিলিয়ন ইউরো মূল্যের অতিরিক্ত অস্ত্র চালানের অনুমোদন দিয়েছে।

সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি