গাজা ছাড়তেও পরিবার প্রতি খরচ হচ্ছে ৩ হাজার ডলারের বেশি!

ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে গাজা ছেড়ে পালানো ফিলিস্তিনি পরিবারগুলোর জন্য এক নতুন সংকট তৈরি হয়েছে। জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থীবিষয়ক ত্রাণ ও কর্ম সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ) জানিয়েছে, নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে বাড়ি ছাড়তেও একটি পরিবারকে গড়ে তিন হাজার ডলারের বেশি খরচ করতে হচ্ছে। সংস্থাটি শুক্রবার এক বিবৃতিতে জানায়, বিভিন্ন কারণে এই ব্যয় বেড়েই চলেছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক বিবৃতিতে ইউএনআরডব্লিউএ জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলার মুখে গাজা উপত্যকায় একটি পরিবারকে বাস্তুচ্যুত হতে গড়ে ৩,১৮০ ডলার খরচ করতে হচ্ছে। জ্বালানি সংকট, আশ্রয় সামগ্রীর ওপর কয়েক মাস ধরে জারি থাকা নিষেধাজ্ঞা এবং উপচে পড়া ভিড় মানবিক পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। এর ফলে বাস্তুচ্যুতির এই ব্যয়ও দ্রুত বাড়ছে।

সংস্থাটি আরও জানায়, চলমান সংঘাতের কারণে বহু পরিবারের আয়ের পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এই বিপুল ব্যয় বহন করা তাদের জন্য প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে।

ইউএনআরডব্লিউএ উল্লেখ করেছে, ইসরায়েল কয়েক মাস ধরে আশ্রয়সামগ্রী সরবরাহে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে, যার ফলে গাজার বাস্তুচ্যুত মানুষেরা অবর্ণনীয় দুর্দশার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে সংস্থাটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে দ্রুত সহায়তা পাঠানোর এবং এই আর্থিক ও মানবিক সংকট মোকাবিলায় কার্যকর ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছে।

ইউএনআরডব্লিউএ তাদের বিবৃতির সঙ্গে একটি ইনফোগ্রাফিকও প্রকাশ করেছে। সেখানে একটি পরিবারের আশ্রয় খুঁজে পাওয়ার আনুমানিক খরচের হিসাব তুলে ধরা হয়েছে। এই হিসাব অনুযায়ী, যাতায়াতের জন্য ট্যাক্সি ভাড়া বাবদ এক হাজার ডলার, একটি তাঁবুর জন্য দুই হাজার ডলার এবং তাঁবু খাটানোর জায়গার জন্য ১৮০ ডলার, অর্থাৎ মোট ৩,১৮০ ডলার প্রয়োজন হচ্ছে।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েল গাজায় ব্যাপক হামলা চালিয়ে আসছে। এই হামলায় এখন পর্যন্ত ৬৫ হাজার ১০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। এছাড়া, ইসরায়েলি অবরোধের কারণে সৃষ্ট দুর্ভিক্ষে কমপক্ষে ৪৪০ জন ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে ১৪৭ জনই শিশু।