চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতির মুখে যুক্তরাষ্ট্র, সুদের হার কমাল ফেডারেল রিজার্ভ

যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েল জানিয়েছেন, দেশটির শ্রমবাজারের দুর্বলতার কারণেই সম্প্রতি সুদের হার কমানো হয়েছে। তিনি বলেছেন, মূল্যস্ফীতির উদ্বেগের চেয়ে ধীরগতির শ্রমবাজারের ঝুঁকি এখন বেশি, যা একটি ‘চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতি’ তৈরি করেছে।

মঙ্গলবার রোড আইল্যান্ড অঙ্গরাজ্যে ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে পাওয়েল বলেন, ‘স্বল্পমেয়াদে মূল্যস্ফীতির ঝুঁকি ঊর্ধ্বমুখী এবং কর্মসংস্থানের ঝুঁকি নিম্নমুখী—এটি একটি চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতি।’ তিনি আরও জানান, উভয় দিকেই ঝুঁকি থাকায় কোনো পথই ঝুঁকিমুক্ত নয়। পাওয়েলের মতে, এই পরিস্থিতিতে ফেডারেল রিজার্ভের দায়িত্ব হলো বেকারত্ব কমানো এবং মূল্য স্থিতিশীল রাখার দ্বৈত লক্ষ্যের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করা।

ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ারম্যান জানান, তিনি বর্তমান নীতির ব্যাপারে স্বস্তিতে আছেন, তবে প্রয়োজন হলে ভবিষ্যতে আরও ছাড় দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পাওয়েল বলেন, ‘কর্মসংস্থানের নিম্নমুখী ঝুঁকি আমাদের লক্ষ্য অর্জনের ক্ষেত্রে ঝুঁকির ভারসাম্যকে বদলে দিয়েছে। বর্তমান নীতি, যা আমি এখনও কিছুটা কঠোর বলে মনে করি, তা আমাদের সম্ভাব্য অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে মানিয়ে চলার জন্য ভালোভাবে প্রস্তুত রেখেছে।’

পাওয়েল উল্লেখ করেন, শ্রমবাজারের সরবরাহ ও চাহিদায় ‘উল্লেখযোগ্য ধীরগতি’ লক্ষ করা গেছে। তিনি বলেন, ‘এই কম গতিশীল এবং কিছুটা দুর্বল শ্রমবাজারে কর্মসংস্থানের নিম্নমুখী ঝুঁকি বেড়েছে।’ সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের শ্রমবাজারে ধীরগতি দেখা গেছে। মার্চ ২০২৫ পর্যন্ত বিগত ১২ মাসের পর্যালোচনায় প্রায় দশ লাখ কম কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে এবং গ্রীষ্মকালে নতুন চাকরির প্রবৃদ্ধি উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গড়ে ৩০ হাজারের নিচে নেমে এসেছে।

যদিও ২০২২ সালে ৪০ বছরের সর্বোচ্চ চূড়ায় পৌঁছানোর পর মূল্যস্ফীতি উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে, তবে এটি এখনও ফেডারেল রিজার্ভের ২ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রার উপরে রয়েছে।

মূল্যস্ফীতির ওপর শুল্কের প্রভাব সম্পর্কে পাওয়েল বলেন, শুল্ক-সম্পর্কিত প্রভাবগুলো তুলনামূলকভাবে স্বল্পস্থায়ী হবে এবং এটি মূল্যস্তরে এককালীন পরিবর্তন আনবে বলে ধারণা করা যুক্তিসঙ্গত। তিনি বলেন, ‘“এককালীন” বৃদ্ধির অর্থ এই নয় যে তা “একবারে” ঘটবে। সরবরাহ শৃঙ্খলের মধ্য দিয়ে শুল্ক বৃদ্ধির প্রভাব পড়তে কিছুটা সময় লাগতে পারে। ফলে, মূল্যস্তরের এই এককালীন বৃদ্ধি সম্ভবত বেশ কয়েক প্রান্তিকজুড়ে ছড়িয়ে পড়বে এবং সেই সময়ে মূল্যস্ফীতি কিছুটা বেশি দেখা যাবে।’

তিনি আরও যোগ করেন, ‘মূল্যস্ফীতির গতিপথ নিয়ে অনিশ্চয়তা এখনও অনেক বেশি। আমরা উচ্চ এবং দীর্ঘস্থায়ী মূল্যস্ফীতির ঝুঁকি সতর্কতার সঙ্গে মূল্যায়ন ও পরিচালনা করব। আমরা নিশ্চিত করব যে দামের এই এককালীন বৃদ্ধি যেন একটি চলমান মুদ্রাস্ফীতির সমস্যায় পরিণত না হয়।’