চাল উৎপাদন বাড়লেও বাজারে চড়া দাম, আগস্টে মূল্যস্ফীতি ১৫ শতাংশের বেশি

বোরো মৌসুমে ধান উৎপাদন বেড়েও বাজারে চালের দাম কমছে না। বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) প্রকাশিত সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে মোটা, মাঝারি ও ভালো মানের সব ধরনের চালেই মূল্যস্ফীতি ১৫ শতাংশের ওপরে ছিল। কেবল মাঝারি চালের দাম কিছুটা কমে আগস্টে মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ১৩.৯৫ শতাংশে।

তবে সামগ্রিকভাবে আগস্টে দেশে মূল্যস্ফীতি কমে দাঁড়িয়েছে ৮.২৯ শতাংশে, যা ২০২২ সালের জুলাইয়ের পর সর্বনিম্ন। খাদ্য ও অ-খাদ্য উভয় খাতেই মূল্যস্ফীতির হার কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসলেও চাল এখনও খাদ্যদ্রব্যের সবচেয়ে বড় চালক হিসেবে রয়ে গেছে। আগস্টে এককভাবে চালই খাদ্য মূল্যস্ফীতির ৪৮.৩৭ শতাংশের জন্য দায়ী।

এরপর মাছ ২৭.২৮ শতাংশ, ফল ৯.৭৬ শতাংশ এবং ভোজ্যতেল ৭.৯৩ শতাংশ অবদান রেখেছে। সবজির অবদান আগের মাসের ৬.৪৮ শতাংশ থেকে নেমে আগস্টে দাঁড়িয়েছে ঋণাত্মক ০.১২ শতাংশে।

সরকার ইতোমধ্যে খাদ্যশস্য সংগ্রহ বাড়িয়েছে। সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত ১৮.২ লাখ টন খাদ্যশস্য সংগ্রহ করা হয়েছে, এর মধ্যে চালই রয়েছে ১৭.২ লাখ টন। একইসঙ্গে ৫ লাখ টন চাল শুল্কমুক্ত আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। চার মাস বিরতির পর আগস্টে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে বেসরকারি খাত চাল আমদানি শুরু করেছে।

জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরের শুরুর দিকে ৫.৭৪ লাখ টনের বেশি চাল বিতরণ করা হয়েছে, যেখানে গত বছরের একই সময়ে বিতরণ হয়েছিল প্রায় ৩.১ লাখ টন।

অর্থনীতিবিদদের মতে, এই উদ্যোগগুলো এবং অনুকূল ফসল উৎপাদন মিলিয়ে আগামী মাসগুলোতে চালের দাম কিছুটা কমতে পারে, যদি নতুন করে কোনো সরবরাহ সংকট দেখা না দেয়।

খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) চাল মূল্যসূচক ২০২৪ সালের আগস্টে যেখানে ছিল ১৩৪, ২০২৫ সালের আগস্টে তা কমে দাঁড়িয়েছে ১০১.৪। বিশ্ববাজারে সিরিয়াল মূল্যসূচকও গত ফেব্রুয়ারি থেকে ধারাবাহিকভাবে নিম্নমুখী।

অ-খাদ্য মুদ্রাস্ফীতি আগস্টে ৯ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে, যা ২০২৪ সালের জানুয়ারির পর প্রথম। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, রাজস্ব শৃঙ্খলা, কঠোর মুদ্রানীতি, মুদ্রা বিনিময় হার স্থিতিশীলতা, সরবরাহ পরিস্থিতির উন্নতি এবং বৈশ্বিক বাজারের অনুকূলতা এ পরিস্থিতি তৈরি করেছে।