জেলেনস্কি: পুতিন যুদ্ধকে আরও ছড়িয়ে দিতে চান

ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি অভিযোগ করেছেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন চলমান যুদ্ধকে আরও সম্প্রসারিত করে চালিয়ে যেতে চাইছেন। বুধবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে তিনি এই মন্তব্য করেন। জেলেনস্কি সতর্ক করে বলেন, পুতিনের এই পরিকল্পনার কারণে এখন আর কেউই নিরাপদ নন।

জেলেনস্কি বলেন, ‘এখন রাশিয়ার ড্রোন ইউরোপজুড়ে উড়ছে এবং রাশিয়ার সামরিক কার্যক্রম বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ছে। পুতিন এই যুদ্ধকে আরও সম্প্রসারিত করে চালিয়ে যেতে চান। এই মুহূর্তে কেউই নিরাপদ বোধ করতে পারে না।’

তিনি আরও যুক্তি দেখান, বিশ্ব নিজেকে রক্ষা করতে ‘অনেক ধীরগতিতে’ এগোচ্ছে। তিনি সতর্ক করেন, এমন একটি সময় আসবে যখন ড্রোনগুলো নিজেরাই একে অপরের সঙ্গে লড়াই করবে এবং গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো ও সাধারণ মানুষকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করবে, যার নিয়ন্ত্রণ থাকবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) পরিচালনাকারী কিছু মানুষের হাতে।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সংযুক্তিকে মানব ইতিহাসের ‘সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক অস্ত্র প্রতিযোগিতা’ হিসেবে উল্লেখ করে জেলেনস্কি প্রশ্ন তোলেন, ‘যদি বন্ধু ও অস্ত্র ছাড়া সত্যিকারের কোনো নিরাপত্তা নিশ্চয়তা না থাকে, এবং যদি বিশ্ব সব হুমকির জবাব দিতে না পারে, তাহলে মানুষের জন্য নিরাপদ কোনো জায়গা কি অবশিষ্ট থাকবে?’

জেলেনস্কি অভিযোগ করেন, ইরান লেবাননের সঙ্গে যা করেছিল, রাশিয়া এখন মলদোভার সঙ্গে ‘তাই করার চেষ্টা করছে’। তিনি ইউরোপকে সতর্ক করে বলেন, তারা মলদোভাকে ‘হারাতে পারে না’। উল্লেখ্য, আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর দেশটিতে সংসদীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, এই বিষয়ে বৈশ্বিক প্রতিক্রিয়া ‘যথেষ্ট নয়’ এবং ইউরোপে তারা ‘ইতিমধ্যেই জর্জিয়াকে হারিয়েছে।’

ভাষণে জেলেনস্কি সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলগুলোতে নিষ্ক্রিয় ভূমিকার জন্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘সুদান, সোমালিয়া, ফিলিস্তিন বা যুদ্ধে জর্জরিত অন্য কোনো দেশের জনগণ জাতিসংঘ বা বৈশ্বিক ব্যবস্থা থেকে আসলে কী আশা করতে পারে? দশকের পর দশক ধরে কেবল বিবৃতি আর বিবৃতি। এমনকি গাজার ঘটনাগুলোরও কোনো সমাধান নেই। এত পরিবর্তনের পরও সিরিয়াকে এখনো তার অর্থনীতিকে শ্বাসরুদ্ধকর নিষেধাজ্ঞাগুলো শিথিল করার জন্য বিশ্বের কাছে আবেদন করতে হচ্ছে।’

তিনি আরও যুক্তি দেখান, আন্তর্জাতিক আইন পুরোপুরি কাজ করে না, ‘যতক্ষণ না আপনার শক্তিশালী বন্ধু থাকে, যারা এর পক্ষে দাঁড়াতে ইচ্ছুক’। তিনি যোগ করেন, ‘বন্ধু ও অস্ত্র ছাড়া কোনো নিরাপত্তা নিশ্চয়তা নেই, কোনো ইউক্রেনীয় এ ধরনের বাস্তবতা বেছে নেয়নি।’