মির্জা ফখরুল: ড. ইউনূসের ভাষণ ‘শক্তিশালী’, ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন

জাতিসংঘে দেওয়া প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের ভাষণকে ‘যথেষ্ট শক্তিশালী’ বলে অভিহিত করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতেই দেশে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে তারা নিশ্চিত।

শুক্রবার নিউইয়র্কের গ্র্যান্ড হায়াত হোটেলে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মির্জা ফখরুল এ মন্তব্য করেন। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে যোগ দেওয়ার পর তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। বিএনপি মহাসচিবের মতে, প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে সরকারের সংস্কার কর্মসূচি এবং জাতীয় ঐক্যের বিষয়টি স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়েছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, অধ্যাপক ইউনূস তার ভাষণে সেই উদ্দেশ্যের কথাই তুলে ধরেছেন, যার ভিত্তিতে বর্তমান সরকার গঠিত হয়েছিল। তিনি ব্যাখ্যা করেছেন, গণঅভ্যুত্থানের পর দেশে যখন শূন্যতা তৈরি হয়, তখন রাজনৈতিক দল ও শিক্ষার্থীরা তাদের ওপর দায়িত্ব অর্পণ করেছিল। ফখরুল আরও বলেন, ‘দেশের অর্থনীতি ও রাজনীতি যে ভয়াবহ অবস্থায় ছিল, সেখান থেকে এক বছরের মধ্যে সরকার পরিস্থিতির উন্নতি করতে চেষ্টা করেছে, যা ভাষণে উঠে এসেছে।’

সরকারের নেওয়া সংস্কার কর্মসূচির সঙ্গে বিএনপির রাজনৈতিক প্রস্তাবনার সাদৃশ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমরা বিএনপির পক্ষ থেকে দীর্ঘদিন ধরেই এ ধরনের প্রস্তাব দিয়ে আসছি। বেগম খালেদা জিয়া প্রথম ২০১৬ সালে ভিশন ২০৩০ উপস্থাপন করেছিলেন, যেখানে কাঠামোগত ও রাজনৈতিক সংস্কারের কথা বলা হয়েছিল। এছাড়া তারেক রহমান ২০২২ সালে ৩১ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেন, যেখানে রাষ্ট্র কাঠামোর সংস্কার ও অর্থনৈতিক সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা হয়।’ তার মতে, আওয়ামী লীগ যে পরিস্থিতি তৈরি করেছিল, তাতে এসব মৌলিক পরিবর্তন অপরিহার্য হয়ে পড়েছিল।

এদিকে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) ইস্যুতে জামায়াতে ইসলামীর আন্দোলন প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব দলের অবস্থান পরিষ্কার করেন। তিনি জানান, বিএনপি সংসদের নিম্নকক্ষে পিআর পদ্ধতির পক্ষে নয় এবং উচ্চকক্ষের বিষয়েও এ নিয়ে কথা বলেনি। তিনি মনে করেন, এ ধরনের বিষয়গুলো আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা হবে।

বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে জাতিসংঘে সঙ্গে নেওয়ায় প্রধান উপদেষ্টার অন্তর্ভুক্তিমূলক দৃষ্টিভঙ্গিরও প্রশংসা করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘আমরা খুব খুশি, ইতিহাসে প্রথমবার তিনি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে সরকারের কাজে অন্তর্ভুক্ত করেছেন এবং তাদের জাতিসংঘে সঙ্গে নিয়েছেন। তার প্রধান উদ্দেশ্য ছিল জাতির ঐক্য প্রদর্শন।’ তিনি এটিকে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে একটি অনন্য ও প্রয়োজনীয় উদ্যোগ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, বিএনপি ও নেতা তারেক রহমান এটিকে পূর্ণ সমর্থন দিয়েছেন।