থমথমে পরিস্থিতি খাগড়াছড়িতে, ১৪৪ ধারা বলবৎ

পাহাড়ি শিক্ষার্থীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনার জেরে কয়েকদিন ধরে উত্তপ্ত খাগড়াছড়িতে এখন থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। সহিংসতার আশঙ্কায় জেলা প্রশাসন অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করেছে, যা এখনো বলবৎ রয়েছে।

রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) জেলা প্রশাসক এবিএম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার জানিয়েছেন, পরিস্থিতি উন্নত না হওয়া পর্যন্ত ১৪৪ ধারা বহাল থাকবে।

এদিকে, শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে অবরোধ চলাকালে সদর উপজেলা পরিষদ এলাকা, মহাজনপাড়া, নারিকেল বাগান, চেঙ্গী স্কোয়ার ও শহীদ কাদের সড়কে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ফাঁকা গুলি ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

এ সময় স্বনির্ভর ও নারিকেল বাগান এলাকায় বেশ কয়েকটি দোকানে হামলার ঘটনাও ঘটে। সহিংসতা বেড়ে যাওয়ায় অতিরিক্ত পুলিশ, ৭ প্লাটুন বিজিবি এবং সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।

এ সংঘর্ষে অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে দুজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। এছাড়া রাতে একটি বৌদ্ধবিহারে নাশকতার প্রস্তুতিকালে তিন যুবককে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

সহিংস পরিস্থিতির কারণে সাজেক ভ্রমণে যাওয়া প্রায় দুই হাজার পর্যটক আটকা পড়েন। পরে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থায় তাদের খাগড়াছড়ি শহরে এনে নিজ নিজ গন্তব্যে পাঠানো হয়।

জানা গেছে, গত ২৩ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় খাগড়াছড়ি সদরের সিঙ্গিনালা এলাকায় অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রী সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন। এ ঘটনায় শয়ন শীল (১৯) নামে এক অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবিতে ‘জুম্ম ছাত্র-জনতা’র ব্যানারে শনিবার সকাল-সন্ধ্যা সড়ক অবরোধের ডাক দেওয়া হয়।

অবরোধ চলাকালে বিভিন্ন স্থানে গাছের গুঁড়ি ফেলে ও টায়ারে আগুন দিয়ে সড়কে ব্যারিকেড সৃষ্টি করা হয়। আলুটিলায় একটি অ্যাম্বুলেন্স ও নারানখাইয়া এলাকায় একটি অটোরিকশা ভাঙচুর করা হয়।

খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার মো. আরেফিন জুয়েল বলেন, বর্তমানে সার্বিক পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। সবাইকে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।