ইউক্রেনকে গোয়েন্দা তথ্য ও ক্ষেপণাস্ত্র দেওয়ার পথে যুক্তরাষ্ট্র

রাশিয়ার জ্বালানি স্থাপনাগুলোতে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ব্যবহারের জন্য ইউক্রেনকে গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহের পরিকল্পনা করছে যুক্তরাষ্ট্র। বুধবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি এই ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা ও পেন্টাগনের সহায়তার অনুমোদন দিয়েছেন। প্রথমবারের মতো ট্রাম্প প্রশাসন এ ধরনের হামলায় সরাসরি সহায়তা দিচ্ছে। একই সঙ্গে ন্যাটো মিত্রদের কাছেও একই ধরনের সহায়তার আহ্বান জানানো হয়েছে। একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মার্কিন কর্মকর্তারা গোয়েন্দা তথ্য বিনিময়ের আগে হোয়াইট হাউসের লিখিত নির্দেশনার জন্য অপেক্ষা করছেন। মস্কো ও কিয়েভের মধ্যে ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় শান্তি আলোচনা ভেস্তে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে ইউক্রেনের সামরিক সক্ষমতা বাড়ানোর এই পদক্ষেপ নেওয়া হলো।

কর্মকর্তারা আরও জানান, ওয়াশিংটন ইউক্রেনকে প্রায় ৫০০ মাইল (৮০৪ কিলোমিটার) পাল্লার টমাহক, বারাকুডা এবং যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি অন্যান্য ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহের বিষয়টিও বিবেচনা করছে, যদিও এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থা (ডিআইএ) এবং কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার (সিআইএ) মুখপাত্ররা এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

এর আগে রবিবার মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স ঘোষণা করেন, ওয়াশিংটন দূরপাল্লার টমাহক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের জন্য ইউক্রেনের অনুরোধ বিবেচনা করছে এবং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এ বিষয়ে ‘চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত’ নেবেন।

তবে এই উদ্যোগকে তেমন গুরুত্ব দেননি ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ। সোমবার তিনি বলেন, ‘এমন কোনো যাদুকরি সমাধান নেই যা কিয়েভ সরকারের জন্য রণাঙ্গনের পরিস্থিতি বদলে দিতে পারে।’

গত সপ্তাহে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি মার্কিন সংবাদমাধ্যম এক্সিওসকে জানান, ওয়াশিংটনের কাছ থেকে অতিরিক্ত দূরপাল্লার অস্ত্র পেলে তারা রাশিয়ার অভ্যন্তরে হামলা চালাবেন। সম্ভাব্য লক্ষ্যবস্তু হিসেবে তিনি ক্রেমলিনের মতো ক্ষমতার কেন্দ্রগুলোর নাম উল্লেখ করেন। জেলেনস্কির এই হুমকির প্রতিক্রিয়ায় পেসকভ বলেন, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ইউরোপীয়দের কাছে নিজেকে একজন ‘সাহসী যোদ্ধা’ হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করছেন।

রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ বলেছেন, তিনি মনে করেন টমাহক ক্ষেপণাস্ত্রের বিষয়টি মূলত ‘ওয়াশিংটনের ওপর ইউরোপীয় চাপের’ কারণে সামনে এসেছে এবং এটি কোনো ‘চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত’ নয়। তিনি আরও বলেন, ‘আমেরিকানরা সবাইকে টমাহক সরবরাহ করে না। ইউরোপীয়দের মধ্যে, আমার ভুল না হলে, তারা শুধু স্পেন ও নেদারল্যান্ডসকে এটি সরবরাহ করে। বাকিদের বিষয়ে তারা কিছুটা সতর্ক। তারা যদি মনে করে যে ইউক্রেন একটি দায়িত্বশীল দেশ এবং দায়িত্বের সঙ্গে এটি ব্যবহার করবে, তবে আমি অবাক হব।’

লাভরভ পেসকভের বক্তব্যের পুনরাবৃত্তি করে বলেন, কিয়েভকে টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র দেওয়া হলেও ইউক্রেনের রণাঙ্গনের পরিস্থিতিতে কোনো পরিবর্তন আসবে না।